দাম বাড়লে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি ‘শিগগিরই’: কৃষিসচিব

কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও জানান ওয়াহিদা আখতার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 10:53 AM
Updated : 14 May 2023, 10:53 AM

বাজারে দাম বাড়তে থাকলে সরকার শিগগির পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার।

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “উৎপাদন ও মজুদ বিবেচনায় দেশে এই মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই; অথচ বাজারে দাম কিছুটা বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয় দেশের অভ্যন্তরে পেঁয়াজের বাজার সবসময় মনিটর করছে। দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকলে শিগগিরর পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”

কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও জানান ওয়াহিদা আখতার।

এদিকে গত বৃহস্পতিবারও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন পেঁয়াজের দাম এখন যেভাবে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ বাড়ানো হবে।

মন্ত্রী বলেছিলেন, “দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমদানি করা হবে।”

রোজার ঈদের পর এবার লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক মাস আগে বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। তখন ছিল রোজা; সেই মাসে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নানা তদারকিও ছিল মাঠপর্যায়ে।

তবে ওই মাস যেতে না যেতেই বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম হয় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ওঠে ৬০ টাকা পর্যন্ত। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় এবং আমদানি পেঁয়াজের দাম উঠেছে ৭০ টাকা কেজি পর্যন্ত। অর্থাৎ, মাসের ব্যবধানে দুই ধরনের পেঁয়াজে দ্বিগুণ দাম বেড়েছে। 

ঢাকার হাতিরপুল এলাকায় শনিবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা কেজিতে। আর বড় আকারের দেশি পেঁয়াজের দাম এই এলাকায় ৭৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ওঠানাম করছে।

সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, কৃষি বিপণণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম, মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ অধিশাখার উপসচিব মুনসুর আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টনেরও বেশি

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন। গত দুই বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টনেরও বেশি। 

এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। আর বর্তমানে মজুদ আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০-৩৫% পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়।

উৎপাদনে খরচ নিয়ে সভায় বলা হয়, বর্তমানে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ পড়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা। 

গতবছর ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি উন্মুক্ত থাকার কারণে আমদানি বেশি হয়েছিল। দেশি পেঁয়াজের বাজারদর কম ৩০- ৩৫ টাকা ছিল। কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিল। সেজন্য, পেঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবছর পেঁয়াজ আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।  

আরও পড়ুন

Also Read: মাস ঘুরে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ, আলু-সবজিতেও অস্বস্তি

Also Read: পেঁয়াজের দাম ‘বাড়তে থাকলে’ আমদানি করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী