দেশি-বিদেশি দুই শতাধিক কোম্পানি এ মলায় অংশ নেয়।
Published : 20 Nov 2022, 08:54 PM
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য প্রসারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২২’ শেষ হয়েছে।
রোববার বিকালে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (আইসিসিবি) এ মেলার অষ্টম আসরের সমাপণী অনুষ্ঠান হয়।”
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন-বাপা ও রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার এ মেলার শুরু হয়েছিল।
এতে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি অংশ নেয়; ভারত, চীন, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, স্লোভেনিয়াসহ প্রায় ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য এবং সেবা প্রদর্শন করে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে এ খাতের সাফল্যের কথা তুলে ধরে মেলা কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, “আমাদের বাংলাদেশের জন্য অ্যাগ্রো প্রসেসিং সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সেক্টর উত্তরোত্তর এগিয়ে যাচ্ছে।
“প্রথমবার যখন এই মেলার আয়োজন করা হয়, কোনো হল পাচ্ছিলাম না, ছোট্ট পরিসরে আমরা আয়োজন করেছিলাম। আজকে আমাদের আয়োজন এতবড় হয়েছে কারণ এই সেক্টর এখন অনেক সফল। আপনারা যারা অংশগ্রহণ করলেন, তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।”
মেলায় শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এই কর্ণধার বলেন, “মেলায় ঘুরে দেখলাম এবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। আপনারা আমাদের কৃষিক্ষেত্রকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সেজন্য আপনাদের আমি কৃতজ্ঞতা জানাই৷”
বৈশ্বিক সংকটে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। এই মেলা থেকে আমরা কিছু নতুন ইনগ্রেডিয়েন্ট পেলাম, পণ্যের উৎপাদন সম্পর্কে জানলাম, কিছু মেধাবীদের সাথে পরিচিত হলাম।”
অনুষ্ঠানে বাপার সাবেক সভাপতি এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, “এই ধরনের মেলা হচ্ছে একটা ডেকোরাম, যার মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে প্রদর্শন করতে পারি।
“এই মেলায় আমরা সফলভাবে লোকাল খাবার দেখাতে পেরেছি। বাইরের দেশের ব্যবসায়ীদের সাথেও আমাদের যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন এই মেলা আরও হয়, সেই কামনাই করি।”
বাংলাদেশে উৎপাদিত কৃষিজ পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখার ব্যাপারে জোর দিয়ে বাপার সাবেক সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, “যারা বাপার মেম্বার আছেন, কিংবা মেম্বার না, তাদের মনে রাখতে হবে আমাদের কৃষিক্ষেত্রের প্রতি আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। যে কৃষিপণ্যটা সবার ঘরে ঘরে পৌঁছায়, সেটার গুণগত মান যেন ঠিক থাকে।
“আমাদের ভালোপণ্যগুলো শুধু বিদেশে রপ্তানিই করব না, দেশের পণ্যগুলোর গুণগত মানও ঠিক রাখতে হবে। দেশের মানুষই যদি আমাদের পণ্যগুলোর উপর আস্থা রাখতে না পারে, তাহলে আমাদের ব্যবসা ব্যর্থ। তাই শুধু রপ্তানি পণ্যই না, দেশের পণ্যগুলোও যেন গুণাগুণে ঠিক থাকে।”
দেশের কৃষকদের নতুন নতুন কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কৃষকদের নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করা যেতে পারে। আমরা এত দাম দিয়ে সয়াবিন তেল আনি, আমরা চাইলেই দেশে সয়াবিন উৎপাদন করতে পারি।”
আয়োজক কমিটির সদস্য এবং বনফুল-কিষোয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব (সিআইপি) বলেন, “অনেক বছর ধরেই বাপা এই মেলার আয়োজন করছে। কিন্তু গত দুবছর করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এবারে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ আমাদের মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের এগ্রো প্রসেসিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলেছে, উন্নতি করে চলছে।”
বাংলাদেশের সকল কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পের সমিতি বাপা ১৯৯৮ সালে ১৩ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বাপার সদস্য সংখ্যা ৪৭৯, যারা বিশ্বের ১৪০টি দেশে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানি করছেন।