বৈদেশিক মুদ্রার চলমান সংকটের মধ্যে এ প্রকল্প না নিয়ে আগে টেলিটকের ফোর জি সেবা ভালো করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 02 Aug 2022, 03:34 PM
রাজধানীর ‘গুরুত্বপূর্ণ’ আবাসিক এলাকা ও সরকারি অফিসে দেড় বছর পর টেলিটকের ফাইভ জি সেবা চালু করতে ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার যে প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছিল, অনুমোদন না দিয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছে একনেক।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ পণ্য বিদেশি মুদ্রা খরচ করে আমদানি করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার চলমান সংকটের মধ্যে এ প্রকল্প না নিয়ে আগে টেলিটকের ফোর জি সেবা ভালো করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এদিন ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্কে বাণিজ্যিকভাবে ৫জি প্রযুক্তি চালুকরণ’ প্রকল্পটি একনেকে তোলে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে সেখানে প্রস্তাব দেওয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্থগিত করতে বলেছেন…, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই মুহূর্তে আমার দরকার নেই। পরে যথাসময়ে বিবেচনা করা হবে।”
প্রধানমন্ত্রী টেলিটকের ফোরজি সেবার মান বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এখনো গ্রাম এলাকায়, হাওড় এলাকায়, চরাঞ্চলে সর্বত্র ভালোভাবে ফোরজি সার্ভিস পাচ্ছে না। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, ‘ওইটা আগে আপগ্রেড কর, শক্তিশালী কর, নিরবচ্ছিন্ন কর। আর ফাইভ জির ইউজটা… এখনো আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য ওই পর্যায়ে পৌঁছায় নাই’।
“প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, ‘এটাও আমরা ভালো করব, আমাদের দরকারও আছে, কিন্তু একটু পরে’।“
টেলিটকে ফাইভ জি? অন্তত দেড় বছরের অপেক্ষা
এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে এম এ মান্নান বলেন, “আমরা এই মুহূর্তে (বৈদেশিক মুদ্রা) ব্যয়ে একটু সাবধানতা অবলম্বন করছি। এই ব্যয়টির প্রায় ৮০ শতাংশ বিদেশি। প্রকল্পটির জন্য যেসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হবে, তা আমরা তৈরি করতে পারি না। সব ইম্পোর্ট করতে হবে। পুরোটাই ইউএস ডলারে পেমেন্ট করতে হবে।
“বর্তমানে আমাদের ডলার ব্যয়ের ওপর একটা ব্রেক আছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এখন দরকার নেই, পরে দেওয়া হবে।”
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঋণ পাওয়া গেলে এ প্রকল্প করা যায় কি না, সেই প্রস্তাব বৈঠকে তুলেছিলেন ‘প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ।
“প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছেন, ঋণ হলেও দেখতে হবে কী ধরনের ঋণ, কার কাছ থেকে ঋণ, কী শর্ত- ওইগুলো বিবেচনা করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এসব বিবেচনায় টেলিটকের ফাইভজি প্রকল্পটি আজকে স্থগিত হয়ে গেছে।”
২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা শহরে বিদ্যমান টেলিটকের ২০০টি ফোর জি বিটিএস সাইটে ফাইভ জি প্রযুক্তিনির্ভর টেলিকম যন্ত্রপাতি সংযোজন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল, যার পুরোটাই আমদানি করতে হত।
এছাড়া টাওয়ার ও কক্ষ অবকাঠামোর প্রয়োজনীয় সংস্কার, বিদ্যুৎ সংযোগের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রেকটিফায়ার ও ব্যাটারি ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছিল।