কোনো পক্ষের দাবি না থাকলে মাস দুয়েকের মধ্যে এসব পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেবে শিল্পমন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্টস, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর-ডিপিডিটি।
Published : 26 Apr 2023, 08:59 PM
বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে এবার নিবন্ধন সনদ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শীতলপাটি, বগুড়ার দই, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম ও আশ্বিনা আম।
কোনো পক্ষের দাবি না থাকলে মাস দুয়েকের মধ্যে এসব পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেবে শিল্পমন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্টস, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর-ডিপিডিটি।
অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (জিআই) মো. জিল্লুর রহমান বুধবার জানান, এর আগে ১০টি পণ্য জিআই সনদ পেয়েছিল। সম্প্রতি আরও একটি পণ্যের জিআই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে। জিআই সনদ পেতে নতুন আবেদনগুলোর মধ্যে আরও পাঁচটি পণ্যের বিষয়ে নির্ধারিত সময়ে কোনো দাবি-আপত্তি না পেলে সেগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
“এখন আমাদের জিআই পণ্য ১১টি। জিআই জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে আরও পাঁচ পণ্যের। এরপর এসব পণ্য নিয়ে দুই মাসের মধ্যে কেউ অপজিশন দেয় কিনা তা দেখা হবে। কোনো অপজিশন না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জিআই সনদ ইস্যুর বিষয়ে বাধা থাকবে না।”
এরমধ্যে বগুড়ার দই এর জন্য ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বগুড়া জেলা আবেদন করে। বাংলাদেশের শীতলপাটি এর জন্য ২০২১ সালের মার্চে আবেদন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন।
শেরপুরের তুলশীমালা ধানের জন্য ২০১৮ সালের এপ্রিলে শেরপুর জেলাপ্রশাসন জিআই সনদ চায়। এছাড়া ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে আবেদন করা হয়।
সবশেষ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম নিয়ে দুই পক্ষ জিআই স্বীকৃতি দাবি করেছিল। শুনানি শেষে দুই জেলার নামেই যৌথভাবে ফজলি আমের জিআই স্বীকৃতি দেয় পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর।
সব প্রক্রিয়া শেষে জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার পর আর কোনো পক্ষের দাবি না থাকায় পণ্যটির জিআই সনদ দেওয়া হয়।
পণ্যের ব্রান্ডিংয়ে এর ভূমিকা তুলে ধরে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (জিআই) জিল্লুর রহমান বলেন, “জিআই আমাদের পণ্যকে প্রমোট করার জন্য এ স্বীকৃতি দেওয়া একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ। পরবর্তীতে এর ইউজার রেজিস্ট্রেশন নেব এবং পাশাপাশি পণ্যের ব্রান্ডিংয়ের জন্য তাদের ট্যাগের জন্য লোগো ডেভেলপ করব।
“আমাদের হাতে আরও বেশ কিছু আবেদন রয়েছে। জার্নালে প্রকাশের জন্য আরও দুটি পণ্য অপেক্ষমাণ রয়েছে- কাঁচাগোল্লা ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল”।
ভৌগলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন- জিআই) হচ্ছে- একটি প্রতীক বা চিহ্ন, যা পণ্য ও সেবার উৎস, গুণাগুণ ও সুনাম ধারণ ও প্রচার করে।
কোনো দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ যদি কোনো পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রাখে, সেই দেশের সংস্কৃতির সাথে যদি বিষয়টি সম্পর্কিত হয়, তাহলে সেটাকে সে দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর জিআই নিবন্ধন দেয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত আইন এবং ২০১৫ সালে বিধিমালা হয়।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পায় জামদানি। এরপর ইলিশ, ক্ষীরশাপাতি আম, ঢাকাই মসলিন, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, নেত্রকোণার বিজয়পুরের সাদামাটি, বাংলাদেশের কালিজিরা চাল, বাগদা চিংড়ি এবং রাজশাহী-চাপাইনবাগঞ্জের সুস্বাদু ফজলি আম এ স্বীকৃতি পায়।
ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্টস, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) জিআই সনদ দেয়।
পুরনো খবর
বাগদার জিআই সনদের সম্ভাবনা জাগাচ্ছে আশা
সুগন্ধী তুলসীমালা ধানে আগ্রহ বাড়ছে শেরপুরে