নারয়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প’ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ‘সরবরাহ লাইন’ নির্মাণে চীনা কোম্পানি ‘চায়না জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে ঢাকা ওয়াসা।
Published : 09 Sep 2021, 05:30 PM
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা ওয়াসার পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান এবং চীনা কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট কিন অং চুক্তিতে সই করেন।
এই পাইপ লাইনের মাধ্যমে ‘গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প’ থেকে রাজধানীর বারিধারা থেকে রামপুরা, বনানী, গুলশান কচুক্ষেত, এয়ারপোর্ট রোড, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিশোধিত পানি সরবরাহ করা হবে।
ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্পটির পরিচালক মো. মাহমুদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৮০০ থেকে ১৬০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপ বসিয়ে পানি সরবরাহ লাইন নির্মাণ করা হবে। চুক্তিতে আগামী তিন বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে ‘গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প’ থেকে বারিধারা পর্যন্ত পানি সরবরাহের জন্য আরেকটি পাইপ লাইন নির্মাণের চুক্তি হয়। আগামী নভেম্বর থেকে মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
পরিশোধনের জন্য গন্ধর্বপুরে ঢাকা ওয়াসার এই প্রকল্পে পানি আনা হবে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা বিশনন্দী এলাকার মেঘনা নদী থেকে।
ঢাকা ওয়াসা বলছে, সেখানে শোধন করে রাজধানীতে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা যাবে, যার সুবিধা পাবে প্রায় ৪৩ লাখ মানুষ।
প্রায় আট হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর ওইসব এলাকায় পানি সরবারের জন্য প্যাকেজ ৩.১ নামে ঢাকা ওয়াসা ও ‘চায়না জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের’ মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “ঢাকাবাসীকে বিশুদ্ধ-সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য আমাদের বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ঢাকা ওয়াসার মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
“ইতোমধ্যে ঢাকা ওয়াসা তাদের টিমের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দিয়েছে যে, এই জনবহুল নগরীতে মানুষের পানির কোনো সমস্যা হচ্ছে না।”
বিশুদ্ধ পানির নির্মাণাধীন বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে প্রায় দুই কোটি মানুষের এই নগরীতে বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার দিকটি ‘আরও সমৃদ্ধ’ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “২০০৮ সালের আগে মানুষের মধ্যে পানি সংকটের কারণে যে হাহাকার ছিল সেটি এখন আর নেই।
“শুধু ঢাকা শহরের মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানির সমস্যা সমাধানই নয়, আমরা সারাদেশে গ্রামীণ পর্যায়েও বিশুদ্ধ সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।”
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রমাণ দিয়েছে।”
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং চীনা প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।