খাদ্যপণ্যের দাম কমায় গত মাসে মূল্যস্ফীতি কমেছিল বলে সরকার তথ্য দিয়েছিল। কিন্তু চলতি মাসে চাল, ডাল ও সয়াবিন তেলসহ বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
Published : 11 Jun 2021, 10:57 PM
রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ২ টাকা করে বেড়েছে। পেঁয়াজও গত মাসের চেয়ে কেজিপ্রতি অন্তত ৪ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে মে মাসের শুরু থেকেই ভোজ্যতেলের দাম ৯ শতাংশ করে বাড়ানো হয়েছিল। গত দুই সপ্তাহে ধীরে ধীরে সেই দর কার্যকর হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের একজন মুদি দোকানি শুক্রবার জানান, প্রতিকেজি সয়াবিন তেল ১৩৫ টাকা এবং সুপার পাম তেল ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। আর বোতলজাত তেলের দাম প্রতি লিটার ১৫২ টাকা ঠিক করে দিয়েছে সরকার।
খুচরায় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা এবং সুপার পাম তেল ১১২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য পণ্যের দাম কম থাকায় মে মাসে দেশের সাধারণ মুল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে এসেছিল বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)।
এপ্রিলের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ থেকে মে মাসে তা কমে ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ নেমে এসেছিল বলে জনিয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, একমাসে সরু চালের দাম সাড়ে ৩ শতাংশ, মাঝারি ও মোটা চাল ১ শতাংশের কিছুট বেশি বেড়েছে।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সরু চাল সাড়ে ৪ শতাংশ, মোটা ও মাঝারি চাল প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ছাপরা মসজিদ মার্কেটে একজন খুচরা চাল বিক্রেতা জানান, এই সপ্তাহে সরু চাল প্রতিকেজি ৬০ টাকায় এবং মোটা ও মাঝারি চাল ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত দুই সপ্তাহ সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ২ টাকা করে বেড়েছে।
বর্তমানে পাইকারিতে মিনিকেট ও অন্যান্য সরু চাল প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ২৭৫০ টাকা থেকে ২৮০০ টাকায়। মাঝারি ও মোটা চাল ২২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই বেড়ে গিয়ে ৫০ টাকায় উঠেছিল। আর এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকায়।
খুচরায় এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও প্রতিকেজি ৪৫ টাকার বেশি।
গত এক সপ্তাহে খুচরা দোকানগুলোতে মশুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা করে বেড়ে মোটা দানা ৭৫ টাকা চিকন দানা ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ করে।
চাল ডালের মতো মাছ মাংসের দামও চলতি সপ্তাহে বাড়তি। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ২৪০ টাকা এবং লেয়ারের মুরগি ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাংসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাছের দামও ঊর্ধমুখী বলে কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
মিরপুর-১ নম্বরে শাহ আলী মার্কেটের চালের আড়ৎদার হাজি মহিউদ্দিন হারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মে মাসের শুরুতে বোরো মওসুমের ধান বাজারে উঠার পর চালের দাম বস্তায় (৫০ কেজি) ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছিল। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে সরু ও মোটা চালের দাম বস্তায় ৭০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
ঊর্ধমুখী বাজারে শাকসবজির দাম কিছুটা হাতের নাগালে। কারওয়ান বাজারে ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়। পটল বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকায়। দেশি টেমেটো বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৫০ টাকায়। আর কাচা মরিচ গত দুই সপ্তাহ ধরেই ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।