“এসব টাস্কফোর্সে দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে এক্সপার্টদের রাখা হবে,” বলেন এবিবি চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান।
Published : 04 Sep 2024, 11:00 PM
ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি উন্নয়নে খেলাপির দিক থেকে নন-পারফর্মিং লোন ম্যানেজমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্ট্রেনদেনিং প্রজেক্ট ও লিগ্যাল ফ্রের্মওয়ার্ক-এই তিন ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক-এমডি ও অ্যাসোসিয়েন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ- এবিবি এর চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান এই তথ্য দিয়েছেন।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকার্স সভার পর সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলছিলেন তিনি।
ব্যাংকার্স সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা চলছিল, এবিবি চেয়ারম্যান সেলিমের কথায় তার কার্যকারিতা শুরু হওয়ার বিষয়ে ধারণা পাওয়া গেল।
টাস্কফোর্স তিনটি গঠনে কত সময় লাগবে, তা এখনও ঠিক করা হয়নি জানিয়ে সেলিম বলেন, “এসব টাস্কফোর্সে দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে এক্সপার্টদের রাখা হবে। এই টাস্কফোর্স হবে আন্তর্জাতিক মানের। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বা আইএমএফ থেকেও এক্সপার্ট আসতে পারেন।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গভর্নর চান বাজারভিত্তিক সুদের হার। তিনি চান বাজারকে প্রভাবিক না করে ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারণ করতে, তাতে বাজার স্থিতিশীল হবে।
“লিবারেল ইন্টারেস্ট রেট রেজিমে গভর্নর বিশ্বাস করেন। উনি ইন্টারেস্ট রেট ফ্রি ফ্লোট করে দিয়েছেন। ল্যান্ডিং রেটে অলিখিত কিছু ক্যাপ ছিল, তিনি তাও তুলে দিয়েছেন। ব্যাংকারদের নির্দেশনা দিয়েছেন, আনইউজুয়াল কোনো ল্যান্ডিং রেটে যেন তারা না যান।”
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের মেতে বৈদেশিক মুদ্রার দর নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করে। তাতে ডলারের দর এক লাফে ৭ টাকা বেড়ে ১১৭ টাকা হয়। ‘ক্রলিং পেগ’ অনুসারে বর্তমানে ডলার দর ১২০ টাকা।
গভর্নর এই দরের মধ্যেই সব ব্যাংককে ব্যবসা পরিচালনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তুলে ধরেন এবিবি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, "এক্সচেঞ্জ রেট এখন ১২০ টাকার মধ্যে রয়েছে। আমরা এই রেটেই ব্যবসা পরিচালনা করব। কার্ব মার্কেটে (অপ্রচলিত বাজার) ডলারের দাম ১২১ থেকে ১২২ টাকায় রয়েছে। ডলার মার্কেটে এখন স্ট্যাবিলিটি এসেছে। এই মাসে আমরা আড়াই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স পাব বলে আশা করছি।”
এলসি খোলায় এখন আর সমস্য নেই বলে মন্তব্য করেন সেলিম বলেন, “এলসি ওপেনিং স্লো-ডাউন হয়েছে, এটা অনেকটা কনজাম্পশনের ওপর নির্ভর করে। ডিমান্ডও অনেক কমে গেছে। মার্কেটে এখন ডলারের কোনো অভাব নেই, যার যখন প্রয়োজন এলসি খুলতে পারছে।”
রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকগুলোতে ডলারের অভাবে অনেক পেমেন্ট আটকে আছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সেসব পেমেন্টের সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছেন এবিবি চেয়ারম্যান।
সেলিম বলেন, "আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ- সরকারি চারটি ব্যাংকে দেড় থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের পেমেন্ট আটকে আছে। আমরা আশা করছি আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই পেমেন্টগুলো সম্পন্ন হবে। তাতে মার্কেটে যে চাপটা এখন আছে, তা রিজলভড হয়ে যাবে।"
বাংলাদেশ ব্যাংক ততক্ষণ পলিসি রেট বাড়াবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে। গভর্নরের কাছ থেকে এ রকমই আভাস পাওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
সেলিম বলেন, "পলিসি রেট ততক্ষণ বাড়তে থাকবে, যতক্ষণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে পলিসি রেট ১০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়া।"