দুই দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ২০২৩ সালে ২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, বলেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত।
Published : 02 Jun 2024, 11:49 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের আগেই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) সমীক্ষা শেষ হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
রোববার ঢাকায় চীন দূতাবাসে দুদেশের মধ্যে এফটিএ বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ২০১৬ সালে এফটিএ’র সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি। যৌথ সভা হয়েছে ২০১৮ সালে।
“আমরা ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন বিনিময় করেছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী চীন সফরের আগে আগে আমরা সমীক্ষা শেষ হয়েছে বলে ঘোষণা দিতে পারব এবং আমরা চলতি বছরের শেষে আমাদের এফটিএ’র আনুষ্ঠানিক দরকষাকষি শুরু করতে পারব।”
আগামী জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে যাওয়ার কথা এর আগে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়। এর আগে তার ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
রোববার ঢাকায় চীনা দূতাবাস ‘চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি: পরস্পরের উপকারী ও লাভজনক পছন্দ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে চীন-বাংলাদেশের এফটিএ সই হলে এটি সন্দেহাতীতভাবে দুই দেশের পারস্পরিক উপকার এবং লাভজনক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন ধারা উন্মোচন করবে; যার মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সোনালী যুগ নিয়ে আসবে।”
তিনি বলেন, টানা ১৩ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। পণ্য বাণিজ্য ২০২৩ সালে ২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের সরাসরি বিদিশি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২৩ সালে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
২০২৬ সালের মধ্যে এফটিএ’র দরকষাকষি শেষ করার বিষয়ে আশা প্রকাশ করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এর মধ্য দিয়ে দুদেশের মধ্যে ‘দ্বিপাক্ষিক ফ্রি ট্রেড জোন’ তৈরি হবে।
গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, দুদেশের মধ্যে এফটিএ সই হলে উভয় দেশ লাভবান হবে। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্কের উপর নির্ভরতার কারণে বাংলাদেশ কিছু চাপে পড়বে।
তবে এফটিএ’র পরে যদি চীনের বিনিয়োগ বাড়ে তাহলে রপ্তানিমুখী খাতের বহুমুখীকরণের মধ্য দিয়ে সেই চাপ থেকে মুক্তির পথ তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নিজেদের গবেষণার সূত্র ধরে রাজ্জাক বলেন, চীনের সঙ্গে এফটিএ হলে বাংলাদেশের জিডিপি ২-৪ শতাংশ বাড়তে পারে।
বাণিজ্যের পাশাপাশি বিনিয়োগের প্রতি জোর দিতে চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটু বলেন, ”চীন শুধু আমাদের সবচেয়ে বাণিজ্যিক অংশীদার নয়, আগামীতে আমরা শুনতে চাই চীন আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।“
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ-চীন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা, চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) সভাপতি কু চ্যাংলিয়াং বক্তব্য দেন।