“আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে আমরা সকলের টাকা ফেরত দেব। ৬ মাসের ভেতরে একটা বড় পরিবর্তন দেখবেন আপনারা”, বলেন তিনি।
Published : 19 May 2024, 10:01 PM
ই কমার্স সাইট ই ভ্যালির গ্রাহকদের আটকে যাওয়া সব টাকা দুই বছরের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী সাইটটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল।
এরই মধ্যে কেনাকাটা আবার শুরু হয়ে গেছে এবং মুনাফা থেকে টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার ঢাকার কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তর কার্যালয়ে ই কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা অর্থ পরিশোধ বিষয়ে পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাসেল।
তিনি বলেন, “ইভ্যালিতে গ্রাহকরা অলরেডি কেনাকাটা শুরু করেছে। আমি আশা করছি ইভ্যালির কোনো গ্রাহক কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। যারা আমাদের কাছে টাকা পায়, আমরা আমাদের মুনাফা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা তাদের দিয়ে দিয়েছি। বাকি সবাইকে দিতে একটু সময় লাগবে শুধু।
“আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে আমরা সকলের টাকা ফেরত দেব। ৬ মাসের ভেতরে একটা বড় পরিবর্তন দেখবেন আপনারা। আর সবার টাকা ফেরত দিতে আমাদের ২ বছর সময় লাগবে।”
এর আগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ই কমার্সে কেনাকাটার সময় সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “একজন স্টুডেন্ট ই কমার্সে ১০০টি বাইক ওর্ডার করেছে। ১০০ টা বাইক একজন স্টুডেন্ট নেবে, এটা সুস্থ ব্যবসা হতে পারে না।
“৭০০ টাকায় কীভাবে পাকিস্তানি ড্রেস বিক্রি করে? আমেরিকার ডায়মন্ড রিং... সেখানে যদি সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে, তাহলে তো আমরা কিছু করতে পারব না।”
ইভ্যালির এমডি রাসেল বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছিলাম একটা আইডি থেকে একটা বাইক অর্ডার করতে পারবে। কিন্তু মানুষ একাধিক আইডি দিয়ে অতিরিক্ত অর্ডার দিয়েছে। এটা আমাদের চোখ এড়িয়ে গেছে। এটা নিয়ে আমরা সচেতন থাকব।”
ই কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে গ্রাহকদের আটকে থাকা ৫৩৫ কোটির মধ্যে ৪০৭ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, “১২৭ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী মহোদয় এটার সমাপ্তি চাচ্ছেন। আমরাও আর ঝুলন্ত অবস্থা চাচ্ছি না। এজন্যই আজকে আমাদের বসা।
“৩০ জুনের মধ্যে এটির একটা সুনির্দিষ্ট উপায় বের করব। আমরা বিশ্বাস করি ই কমার্সকে এগিয়ে নিতে হবে। তাই একজন ২৭ মাস, আরেকজন ৬ মাস জেল খেটেছেন, তাদেরকে নিয়েও আজ মিটিং করেছি।”
তিনি বলেন, অধিদপ্তরের অভিযোগ ও তদন্ত শাখার পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে। তারা এই ১২৭ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন করবে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে সেই প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “মূলত বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তটা বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীই দেবেন।”
ই কমার্স কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে যেসব মামলা হয়েছে তার মধ্যে বেশ কিছু তদন্ত চলমান, তিনটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইভ্যালি কিছু কিছু টাকা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দিচ্ছে, আরও কিছু দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কিউকমের কিছু টাকা বাকি আছে, সেগুলো কীভাবে দিবে তাও দেখা হচ্ছে। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি।"
গেটওয়েতে টাকা না থাকলে কীভাবে দেবে- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে সফিকুজ্জামান বলেন, “সবার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিতে পারবে না। যেটা মানি লন্ডারিং হয়ে গেছে, সেই টাকা তো আমরা দিতে পাড়ব না।”