বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সার্কুলার বলছে, রপ্তানির বিপরীতে আগের হারে দেওয়া নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে আরও এক মাস।
Published : 12 Feb 2024, 11:07 PM
স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৈরি পোশাক ও চামড়াসহ ৪৩ খাতের রপ্তানি পণ্যে প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে; কিছু পণ্যে ফিরেছে হারানো নগদ সহায়তা।
আগের সিদ্ধান্তের ১২ দিন পর সোমবার প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকরের সময় এক মাস বাড়িয়ে জানুয়ারির বদলে ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সবপণ্যই রপ্তানির বিপরীতে আরও এক মাস আগের হারেই নগদ সহায়তা পাবে।
একই সঙ্গে পোশাক খাতের কিছু পণ্যের হারানো প্রণোদনা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা আগামী জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
সোমবারের সার্কুলারে বলা হয়, পুরুষদের শার্ট (এইচএস কোড ৬১০৫), পুরুষদের অর্ন্তবাস ও রাতে ব্যবহৃত শার্ট, পাজামা, গোসলের আগে ও পরে ব্যবহৃত পোশাক (এইচএস কোড ৬১০৭), টি-শার্ট, শরীরচর্চার জন্য আটসাঁটো জাতীয় পোশাক (এইচএস কোড ৬১০৯), জার্সি, কার্ডিগান, ওয়েস্ট কোটস জাতীয় পোশাক (এইচএস কোড ৬১১০), পুরুষদের জ্যাকেট, স্যুট, ব্লেজার, ট্রাউজারস, শিশুদের গলাবন্ধনী, ব্রেসওয়ারঅলস, ব্রিচেস অ্যান্ড শর্টস (সাঁতারের পোশাক বাদে) জাতীয় পোশাকে (এইচএসব কোড ৬২০৩) রপ্তানি প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
গত ৩০ জানুয়ারি এ কয়টি খাতের পোশাকের উপর রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা তুলে নিয়েছিল সরকার।
এরপর পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা এ প্রণোদনা তুলে দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন। তারা এতে পোশাক খাত চাপে পড়বে বলে দাবি করেন। এ নিয়ে সরকারপ্রধানসহ নীতি নির্ধারকদের সঙ্গেও দেখা করেন এ খাতের ব্যবসায়ী নেতারা।
ব্যবসায়ীদের এ দাবির মধ্যেই আগের সার্কুলারে কিছুটা পরিবর্তন এনে নতুন প্রণোদনার তালিকা প্রকাশ করা হয়।
রপ্তানিতে প্রণোদনা ওঠানো শুরু, কমছে ৪৩ খাতের পণ্যে
হারানো প্রণোদনা ফেরত চায় বিজিএমইএ
সরকার গত অগাস্টে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রণোদনার হার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। পরে ৩০ জানুয়ারি সার্কুলারের মাধ্যমে কিছু খাতে প্রণোদনা তুলে দিয়ে রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার পরিমাণ কমানো হয়। অর্থবছরের বাকি সময়ের জন্য প্রণোদনার নতুন হারের তালিকাও সেদিন প্রকাশ করা হয়।
সেই তালিকা অনুযায়ী, শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন রপ্তানিকারকরা, আগে যা ছিল ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ।
সেদিন সার্কুলারে প্রণোদনা কমানোর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, ‘‘আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। একইসঙ্গে রপ্তানি প্রণোদনা/নগদ সহায়তা একবারে তুলে নিলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে রপ্তানি বাণিজ্য। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নগদ সহায়তার হার অল্প অল্প করে হ্রাস করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’’
এতে বলা হয়, ‘‘দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকার চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদান করছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন-ডব্লিউটিও) বিধিবিধান অনুসারে বিষয়টি রপ্তানিনির্ভর সাবসিডি হিসেবে বিবেচিত হয়।’’
এলডিসি থেকে বেরিয়ে এলে এ ভুর্তকি তুলে নিতে হবে; গ্রাজুয়েশনের বাকি সময়ে যাতে একবারে চাপ না হয় সেজন্য পর্যায়ক্রমে নগদ প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।