শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম মজুমদার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছিলেন ব্যাংক খাতের একজন আলোচিত ব্যক্তি।
Published : 02 Oct 2024, 09:31 PM
পোশাক রপ্তানির আড়ালে ‘মানিলন্ডারিং’এর মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের অভিযোগে নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
বুধবার সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড থেকে ১৩০টি এলসি-সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) নেয়।
পরে এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করলেও নির্ধারিত সময়ের পরও রপ্তানিমূল্যের প্রায় ৩০ লাখ ডলার তারা দেশে আনেনি বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ‘প্রমাণ’ পাওয়ার কথা বলেছে সিআইডি।
এছাড়া যুক্তরাজ্যে ‘অর্থ পাচারের মাধ্যমে’ নজরুল ইসলাম মজুমদার লন্ডনের ফিলিমোর গার্ডেন এবং ব্রান্সউইক গার্ডেনে তার মেয়ে আনিকা ইসলামের নামে বাড়ি কিনেছেন বলেও অভিযোগ পেয়েছে সিআইডি।
অভিযোগের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড সুবিধার আওতায় বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল এনে সেই পণ্য দেশীয় খোলা বাজারে বিক্রয় করে শত শত কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে।
“নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে (নজরুল ইসলাম মজুমদার) নাসা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট চারটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে আমদানি এবং রপ্তানির আড়ালে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিয়ের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।”
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট নজরুল ইসলাম মজুমদারে বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নিয়ে আলাদা অনুসন্ধান চালাচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম মজুমদার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছিলেন ব্যাংক খাতের একজন আলোচিত ব্যক্তি। ২০০৮ সাল থেকে টানা ১৭ বছর তিনি বাংলাদেশ এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান ছিলেন।
সরকার পতনের পর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে সরিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বিএবির দায়িত্ব থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার আদালতে হাজির করা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ইমন হোসেন গাজী হত্যা মামলায় তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান বিচারক।
এর আগে ২৫ অগাস্ট এক্সিম ব্যাংক ও বিএবির চেয়ারম্যান এবং তার স্ত্রী নাছরিন ইসলামের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ রাখতে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ।