২০১৩ সালে বিয়ের তিনদিন পর মারা যান গৃহবধূ মনিরা; যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।
Published : 05 Apr 2023, 04:08 PM
এক দশক আগে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় যৌতুকের দাবিতে নববধূ মনিরা পারভীনকে হত্যার অভিযোগে করা মামলার রায় আবারও পিছিয়েছে।
বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মাফরোজা পারভীন আগামী ৭ মে নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।
এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মত মনিরা হত্যা মামলার রায় পেছাল বলে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল করিম জানিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মনিরার স্বামী নাসির হোসেন, ননদ হাসিনা ও তার স্বামী মিলন, মিলনের ভাই দেলোয়ার হোসেন এবং নাসিরের চাচা দ্বীন ইসলাম। জামিনে থাকা আসামিরা সবাই এদিন আদালতে হাজিরা দেন।
মনিরাকে হত্যার অভিযোগে ২০১৩ সালে ২৩ জুন খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন তারা বাবা মো. মোস্তফা। মামলায় নাসির ও তার চাচাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়।
তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কেএম আশরাফ উদ্দিন। পরে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়।
মামলায় বলা হয়, খিলক্ষেতে মনিরা পারভীন ও নাসির হোসেনের বাসা ছিল পাশপাশি। ২০১৩ সালের ১৮ জুন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মনিরা ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির পর পরিবার জানতে পারে, কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে মনিরাকে বিয়ে করেছেন নাসির।
মনিরার বাবা মোস্তফা এই খবর শোনার পর নাসিরদের বাসায় যান এবং তার বাবা হাছেন আলীকে বলেন তার মেয়েকে খুঁজে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। তখন হাছেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বলে অভিযোগে বলা হয়। যৌতুক না দিলে বাবা-মেয়েকে ‘খুনের হুমকি‘ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করা হয়।
আরও বলা হয়, ওই ঘটনার পরদিন মনিরাকে নিয়ে নাসির তার বাসায় যান। বাড়িতে ঢোকার পরপরই নাসিরের বাবা, মাসহ পরিবারের অন্যরা মিলে মনিরাকে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে, কিলঘুষি মেরে গুরুতর জখম করে বাড়ির কাছে একটি বালুর মাঠে ফেলে রাখে।
এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আশিয়ান সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ২২ জুন মনিরার মৃত্যু হয়।
এ মামলার বিচারে আটজনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত।
আরও পড়ুন-