এমসি কলেজে ধর্ষণ: ২ মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে রুল

রাষ্ট্রপক্ষসহ অন্যান্য বিবাদীদেরকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 01:11 PM
Updated : 16 August 2022, 01:11 PM

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণ এবং চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের দুই মামলার বিচারকাজ কেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে না, সেই প্রশ্নে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তরে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চেয়েছে আদালত।

ভুক্তোভোগী নারীর স্বামীর এর আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও আহমেদ সোহেলের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেয়।

সরকারসহ বিবাদীদেরকে দশ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে হাই কোর্টের আদেশে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাবরিনা জেরিন ও এম আব্দুল কাইয়ূম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

গত বছরের ১৭ জানুয়ারি ধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠন করে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। এরপর গত ১১ মে একই ট্রাইব্যুনাল ধর্ষণের দিন সংঘটিত চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে করা মামলারও অভিযোগ গঠন করা হয়।

মামলা দুটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে দুই সপ্তাহ আগে হাই কোর্টে আবেদন করেন বাদী।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গেলে ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।

পরদিন সকালে গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করেন। আর ভুক্তোভোগী নারীর স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করে।

২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রধান আসামি ছাত্রলীগকর্মী সাইফুরসহ আট জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

এর মধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের মামলাটির অভিযোগপত্র মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা পড়ে। অভিযোগপত্রে আট আসামির মধ্যে ছয়জনকে ধর্ষণে সরাসরি জড়িত আর দুইজনকে তাদের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এরা হলেন- প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া। তাদের সহযোগী হচ্ছে- রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম।

পরে গ্রেপ্তার আট আসামির উপস্থিতিতে গত বছরের জানুয়ারি মাসে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু মামলা দুটি একই আদালতে বিচারে হাই কোর্টের নির্দেশ থাকায় এবং চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলার অভিযোগ গঠন না হওয়ায় ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ আটকে যায়।

পরে চলতি বছরের ১১ মে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক। দুটি মামলার অভিযোগ গঠনের পরও বিচারকাজ শুরু না হওয়ায় মামলা দুটি স্থানান্তরে হাই কোর্টে আবেদন করেন ধর্ষণ মামলার বাদী। সে আবেদনে শুনানির পর মঙ্গলবার আদেশ দিল উচ্চ আদালত।