ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সাত দেশের কূটনীতিবিদদের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা।
রোববার সকালে গুলশানের এবিসি হাউজে এ বৈঠকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আলোচনায় এসেছে বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে তিনি সংবাদিকদের বলেন, “আপনারা তো সব কিছু জানেন যে, দেশের মানুষ যেভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দেশের বর্তমান অবস্থা ও নির্বাচন, সারা বিশ্বের যারা গণতান্ত্রিক দেশ আছে, সবাই নিবিড়ভাবে বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করছে।
“এর অংশ হিসেবে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) দেখছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবস্থা কী? মানবাধিকার, আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেমন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা কাজ করছে দেশের ভেতরে, দেশের বাইরে, সেটার ওপর তো স্বাভাবিকভাবে একটা দৃষ্টি তাদের আছে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আজকে এই আলাপটা।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বৈঠকে অংশ নেন।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলির নেতৃত্বে ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও সুইডেনের কূটনীতিকরা অংশ নেন বৈঠকে।
গুলশানের এবিসি হাউজে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
নির্বাচন নিয়ে কী আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আগামী নির্বাচনে যদি দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে, তাহলে বাংলাদেশ যে সংকটের দিকে যাবে, এই শঙ্কা দেশের ভেতরে যেভাবে কাজ করছে, দেশের বাইরেও কাজ করছে। এই শঙ্কা থেকে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) জানতে চাইছে যে, কীভাবে আগামী নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে, কীভাবে এটাকে নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক করা যায়।
“সকলের উদ্দেশ্য একটাই, বাংলাদেশের মানুষের যে চিন্তা যে এটাকে নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, যার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ হবে, নির্বাচিত সরকার হবে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনাটা হচ্ছে।”
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ইউরোপীয় কূটনীবিদদের সেই অবস্থানও জানানোর কথা বলেন আমীর খসুর।
“অবশ্যই এ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না- সেটা আমরা খোলাখুলিভাবে বলেছি। বিশ্বে যারা বাংলাদেশের ওপর নিবিড়ভাবে কাজ করছে, পর্যবেক্ষণ করছে, সবার আছে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, বর্তমান দখলদার, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি, তাদের সরকার, তাদের সংসদ নির্বাচিত করতে পারবে না। এই বিষয়টা প্রতিনিয়ত যেভাবে বলা হচ্ছে, তাদের কাছে জানা আছে।”
বিষয়গুলো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী মনে করছে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, “তারা কী মনে করেন সেটা তারাই বলতে পারবেন। আমি তো বলতে পারব না।”
আরেক প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু জানান, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি।