আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়ার কোনো সুখবর না থাকায় আরো তিন দিনের সতর্কবার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর।
Published : 25 Apr 2024, 11:36 AM
প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে দুই দফায় টানা ছয় দিনের সতর্কবার্তার পর নতুন করে আরো তিন দিনের সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহ আরো ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
“বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে এ সময় অস্বস্তি বাড়তে পারে।”
বুধবার ৫২ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার মধ্যে বাগেরহাটের মোংলায় দেশের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলমান এ দাবদাহ থেকে সহসা মুক্তি না মেলার কথা আবহাওয়ার পূর্বাভাসগুলোতে আগেই বলা হয়েছিল। জনগণকে সচেতন করতে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল বিশেষ বার্তায়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এর বাইরে ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝরি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের বাকি অংশে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চলমান তাপপ্রবাহ চলতে পারে মে মাসের ৪/৫ তারিখ পর্যন্ত; তবে এ সময়ে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠবে না।
“তাপমাত্রা আরেকটু বাড়ার সম্ভাবনা আছে, তবে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে হালকা বৃষ্টি সিলেট, নেত্রকোণা এলাকায় হতে পারে, অন্য অঞ্চলে হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০ এপ্রিল; সেদিন যশোরে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
প্রচণ্ড গরমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর আসছে। যে কারণে জনগণকে সচেতন করতে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে।
বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এদিন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় তীব্র গরমে বাড়ির আঙিনায় পড়ে মারা যান এক স্কুল শিক্ষক।
আগের দিন মঙ্গলবার গুলিস্তানের রাস্তায় হাঁটার সময় প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় ঢলে পড়েন এক ব্যক্তি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন বলে ধারণা পুলিশের।
এর আগে ২০ এপ্রিল হিটস্ট্রোকে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। ২১ এপ্রিল মেহেরপুরে গৃহবধূ, সিলেটে রিকশাচালক ও নরসিংদীতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। এরপর ২২ এপ্রিল ঢাকার সড়কে অচেতন হয়ে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়। হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকদের ধারণা।
আরো পড়ুন-
গরমের ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ শিশুরা: সতর্কতা জারি ইউনিসেফের
গরমে তিন জেলায় নারীসহ ৩ জনের মৃত্যু