জিম্মি নাবিকরা মানসিকভাবে চাপে থাকলেও ভালো আছেন, বলেন মালিক পক্ষের মুখপাত্র।
Published : 17 Mar 2024, 08:15 PM
সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও এখনও জাহাজ ছাড়িয়ে আনার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না মালিকপক্ষ। জলদস্যুদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টাও করছে তারা।
তবে গত পাঁচ দিনেও জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সূত্রের দেখা পায়নি এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ।
কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত জাহাজটি আটকে রাখা ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ চেয়ে কোনো প্রস্তাবও তারা পাননি।
রোববার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সবশেষ শনিবার রাতে জাহাজের এক নাবিকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। জিম্মি নাবিকরা মানসিকভাবে চাপে থাকলেও ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “জাহাজের যতটুকু খাবার ও সুপেয় পানি ছিল সেগুলো দিয়ে এখনও চলছে। জলদস্যুরা তাদের সাথে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করেনি। তবুও নাবিকরা একটু উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক… বন্দি থাকলে উদ্বিগ্নতা কাজ করে।”
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরের সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিকের সবাইকে জিম্মি করে।
সবশেষ পদক্ষেপের বিষয়ে মিজানুল বলেন, “শুরু থেকেই আমাদের প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মাধ্যমে জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। বীমা প্রতিষ্ঠানও তাদের দিক থেকে যোগাযোগ করছে। সরকারের পক্ষ থেকেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে জাহাজটির বিষয়ে। কিন্তু এখনও কোনো কিছুই হয়নি। জলদস্যুদের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের প্রস্তাব পাঠানো হয়নি।”
পাঁচ দিন আগে মঙ্গলবার কয়লাবোঝাই জাহাজটি জিম্মি করার পর সেটিকে প্রথমে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। এরপর সোমালিয়ায় যে স্থানে জাহাজটি প্রথমে নোঙর করেছিল পরে সেখান থেকে তার অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে বলে আগে জানিয়েছিল কবির গ্রুপ।
আটক জাহাজটিকে ঘিরে ইউরোপীয় ও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর মধ্যে এটি মাঝেমধ্যেই অবস্থান বদল করছে। এটিতে দস্যুদের সংখ্যাও বেড়েছে। অন্তত ৫০ দস্যুর অবস্থান করার কথা জেনেছে জাহাজে থাকা এক নাবিকের পরিবার। শুরুতে অল্প সংখ্যক অস্ত্রধারী জলদস্যু মাঝ সমুদ্রে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করে এক কর্মকর্তা বলেন, জাহাজের নাবিকদের মত জলদস্যুদেরও মনে ভয় আছে। যে কারণে তারা শুধু অবস্থান পাল্টাচ্ছে।
এমভি আবদুল্লাহ: বীমা কোম্পানির মাধ্যমে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ১২ দস্যু, এখনো ‘অপারেশন আটলান্টার’ নজরে
জাহাজের নিরাপত্তায় নিয়ম কী? এমভি আবদুল্লাহ কতটা মেনেছে?
অবস্থান বদলেছে আবদুল্লাহর, বেড়েছে জলদস্যুর সংখ্যা
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকেই সাগরে নিরাপত্তার দায়িত্বে জাহাজগুলো সেটিকে উদ্ধারে চেষ্টা করেছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী সোমলি জলদস্যুদের কাছ থেকে মাল্টার পতাকাবাহী একটি জাহাজ উদ্ধার করে বেশকিছু জলদস্যু আটক করেছে বলে খবরও বেরিয়েছে। এজন্য নিজেদের নিরাপত্তায় ইতোমধ্যে তিনবার অবস্থান পাল্টাচ্ছে বলে ধারণা।
এই ভয় থেকেই দস্যুরা বিভিন্ন সময়ে জিম্মি নাবিকদের দিকে অস্ত্র তাক করে তাদের ভয় দেখাচ্ছে।
এদিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জিম্মি হওয়া জাহাজ নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ পরিবেশন করছে বলে খেদ প্রকাশ করেন কবির গ্রুপের মুখপাত্র মিজানুল।
তিনি বলেন, এ ধরনের নিউজের কারণে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।