ঢাকার মিরপুরের শাহআলী থানার এএসআই হুমায়ুন কবির হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রিয়া ওরফে সুহাসিনীকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার সুবাস্তু টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে র্যাব-৩ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েক দফা নাম ও পরিচয় পাল্টে গত ১০ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন রিয়া। এর মধ্যেই ২০১৭ সালে তার সাজার রায় হয়।
সেই মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর পারিবারিক কলহের জের ধরে মিরপুরের বাসায় এএসআই হুমায়ুন কবিরকে ইনজেকশনে বিষ প্রয়োগের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বজলুর রশিদ বাদী হয়ে মামলা করলে ২০১৪ সালের ২০ জুলাই মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
ওই তিনজন হলেন হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে নার্স রহিমা সুলতানা রুমি, তার বন্ধু মো. রাফা এ মিষ্টি এবং মিষ্টির কথিত প্রেমিকা ফজিলাতুন্নেছা রিয়া।
২০১৫ সালের ১৪ মে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে। বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৩০ মে রায় দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহমান সরদার।
রায়ে রুমি ও মিষ্টির মৃত্যুদণ্ড হয়, রিয়ার হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রুমি ও মিষ্টি সে সময় কারাগারে থাকলেও রিয়া মামলার শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন।
শুক্রবার র্যাব-৩ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের পর আত্মগোপনে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় পোশাককর্মী হিসেবে চাকরি নেন রিয়া।
২০১৫ সালে নাম ও পরিচয় পরিবর্তন করে এসএসসির জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে ঢাকায় এসে একটি মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে চাকরি শুরু করেন। পরে ২০১৬ সাল থেকে মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে চিত্রজগতে জড়িয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে ফজিলাতুন্নেছা ওরফে রিয়া থেকে তিনি সুহাসিনী ওরফে অধরা নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। মেরুল বাড্ডার সুবাস্ত টাওয়ারের ওই বাসায় তিনি একাই বসবাস করে আসছিলেন বলে র্যাবের ভাষ্য।