মাধ্যমিকে দুর্বলতা স্পষ্ট, কলেজে বাড়তি পদক্ষেপের তাগিদ

পাসের হার বাড়ল কী কমল, তার চেয়ে জরুরি শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা পাওয়া, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2022, 07:17 PM
Updated : 28 Nov 2022, 07:17 PM

একে তো মহামারী ছেদ ঘটিয়েছে স্বাভাবিক পড়াশোনায়, তার মধ্যে বন্যায় পরীক্ষা পেছানো মনঃসংযোগে ঘটিয়েছে বিঘ্ন; এর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিকের বৈতরণী পেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের শেখায় দুর্বলতা ধরা পড়েছে বিশেষজ্ঞদের চোখে। তাই কলেজমুখী এই শিক্ষার্থীদের শেখার ঘাটতি পূরণে বাড়তি পদক্ষেপের তাগিদ এসেছে।

মহামারী আর বন্যার বাধায় এবার সাত মাস পর ২০২২ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসেছিল ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। সোমবার তাদের ফল প্রকাশিত হয়েছে।

তাতে দেখা যায়, এবার পাসের হার আগের বারের চেয়ে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। এবার পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, গতবার এই হার ছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

নানা দৈব দুর্বিপাক পেরিয়ে আসা এই শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু দুর্বলতা ধরা পড়েছে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণে।

একাদশ শ্রেণিতে অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। না হলে এই ঘাটতি আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে তাদের।
শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তোফাজ্জুর রহমানের ভাষ্যে, “এবার যারা এসএসসি পাস করেছে, তারা কিন্তু মহামারীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা একেবারেই ক্লাস করতে পারেনি। অনলাইনে করেছে। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী অনলাইনেও ক্লাস করতে পারেনি।”

ফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এসএসসিতে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে বিজ্ঞানে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং মানবিকে ৮০ দশমিক ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

গত বছর বিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ০৩ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৯৩ দশমিক ৪১ শতাংশ ও মানবিকে ৯৩ দশমিক ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল।

অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মানবিকে পাসের হার কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ পয়েন্ট।

Also Read: মাধ্যমিকে পাসের হার কমে ৮৭.৪৪%

Also Read: এসএসসি: বন্যার ধাক্কা সিলেট বোর্ডে

Also Read: দুর্যোগ কবলিত এলাকায় পরে পরীক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

Also Read: কলেজে ভর্তি আগের পদ্ধতিতে, আসন সংকট নেই: দীপু মনি

Also Read: এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত

বোর্ডগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পাসের হারে পিছিয়ে থাকা বোর্ডগুলোর শিক্ষার্থীদের মানবিকে পাসের হার কম।

দিনাজপুর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৯৬ দশমিক ০৩ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৮৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বিপরীতে মানবিকে পাসের হার ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

দিনাজপুরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর বলেন, “বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের আমরা বেশি সিরিয়াস দেখি। আমাদের মফস্বল এলাকার মানবিকের শিক্ষার্থীরা তেমন সিরিয়াস না। তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেনি।”

তার মতে, মানবিকের ফলের বিপর্যয়ের কারণেই তার বোর্ডে এবার পাসের হার কমেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ভূগোল, গণিত ও পৌরনীতিতে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে।

দিনাজপুর বোর্ডে এবার পাসের হার ৮১ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২০২১ সালে যা ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।

আবার যেসব বোর্ডে মানবিকের ফল তুলনামূলক ভাল হয়েছে, সেসব বোর্ড সার্বিক ফলেও এগিয়ে রয়েছে। মানবিকে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করা যশোর বোর্ড এবার বোর্ডগুলোর মধ্যে সার্বিক ফলাফলে শীর্ষে রয়েছে।

এই বোর্ডে মানবিকে পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র মনে করেন, মূল বই পড়ার উপর জোর দেওয়ায় তাদের বোর্ড ভালো ফল করেছে।

“আমরা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ে থাকি। বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সমস্ত স্কুলগুলো মূল বই পড়ানোর উপর জোর দিয়ে থাকে। এটা মহাওষুধের মতো কাজ করেছে।”

গত বছর ৯৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ পাসের হার নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থান ছিল সিলেট বোর্ডের। এ বছর এই বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।

বন্যার ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৮৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং মানবিকে ৭৩ দশমিক ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

সিলেট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রমা বিজয় সরকার খারাপ ফলের জন্য বন্যাকে দায়ী করে বলেন, “বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট বোর্ড। এক মাস বন্যা ছিল, আর রিকভারির জন্য আরও এক মাস লেগে গেছে। দুই মাস শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার বাইরে থাকায় প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাচ্চাদের বই-খাতা পানিতে ভেসে গেছে। ওদের আমরা বই দিয়েছি, কিন্তু তারপরও গ্যাপ থেকে গেছে।”

সিলেট বোর্ডের বিজ্ঞান বিভাগে এবার পরীক্ষার্থী ছিল ২৩ হাজার ২৩০ জন, যেখানে পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষায় ৮ হাজার ৮৪৬ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। মানবিকে পরীক্ষা দেয় ৮৩ হাজার ৩১৫ জন, পাসের হার ৭৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বোর্ড চেয়ারম্যান রমা সরকার বলছেন, বিজ্ঞান বিভাগে কম শিক্ষার্থী থাকা ফলাফল খারাপে প্রভাব রেখেছে।

“আমাদের শিক্ষার্থী মানবিকে বেশি। মানবিকের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ও গণিতে কিছুটা দুর্বল থাকে। আমরা দেখেছি, মানবিকের কিছু শিক্ষার্থী গণিতে খারাপ করায় আমাদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।”

গত বছর গণিতের মতো কঠিন বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে কেবল তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছিল। সে কারণে ২০২১ সালে পাসের হার অনেক বেশি ছিল বলে মনে করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

“যদি মহামারীর আগের সাথে তুলনা করি, এবার ভালো করেছে শিক্ষার্থীরা। এবার গণিত আর ইংরেজি পরীক্ষা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এই দুটো বিষয়ে দুর্বল হয়ে থাকে। সে কারণে পাসের হার গতবারের চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে।”

ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৯০ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং মানবিকে ৮৪ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

তবে শুধু মানবিকের কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে, বিষয়টি মানতে নারাজ তিনি।

তপন সরকার বলেন, “প্রতিবার মানবিকে কিন্তু এমনই রেজাল্ট হয়। গতবার ভালো হয়েছিল, কারণ শুধু তিনটা নৈবচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছিল। এবার তো চারটা বিষয় ছাড়া সব বিষয়েই হয়েছে।”

সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে দুর্ভোগ

গত বছর তিনটি নৈর্বচনিক বিষয় ছাড়া বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল দেওয়া হয়েছিল।

এবার ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ফল খারাপ হয়েছে।

ভিকারুননিসা স্কুল ও কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ইকরাজ জাহান। কিন্তু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় জেএসসিতে জিপিএ-৫ না পাওয়ায় এবার সে বিষয়ে তিনি জিপিএ-৫ পাননি। ফলে গোল্ডেন এ প্লাস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, “এবার তো আমি এই পরীক্ষাটা ভালো দিতে পারতাম। কিন্তু পরীক্ষাই তো হল না। পরীক্ষা হলে আফসোসটা থাকত না।”

মনিপুর স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ফারহানের মা পারভীন সুলতানা জানান, তার ছেলে তথ্য ও প্রযুক্তি এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে জিপিএ-৫ পাননি।

“চতুর্থ বিষয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ায় টেনেটুনে এ প্লাস এসেছে। কিন্তু নম্বর তো কমে গেল। সব পরীক্ষা দিতে পারলে এই চারটা বিষয়ের পরীক্ষা নিলে কী অসুবিধা হত?”

ঘাটতি পূরণে জোর

রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের ২৮৫ জন শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, যাদের মধ্যে ২০০ জন জিপিএ ৫ পান। পাসের হার ৯৯ শতাংশ।

তবে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া মনে করেন, পাসের হার বাড়ল কী কমল, তার চেয়ে জরুরি বিষয় শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন শিক্ষা পেল কি না?

কোভিডের কারণে এবার এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা দেড় বছরের বেশি সময় শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে পারেনি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় নানা ক্ষেত্রে তাদের শিখন ঘাটতি থেকে গেছে বলে মনে করেন তিনি।

“এসব শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ সহজে হবে না। তাদের যে বিষয়গুলো পড়ানো হয়নি, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ছিল, সেগুলো একাদশ শ্রেণিতে অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। না হলে এই ঘাটতি আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে তাদের।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক তারিক আহসানও একই কথা বলেন। তাই তিনি কলেজে ঘাটতি পূরণের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “এদের লার্নিং গ্যাপও কিন্তু বেশি। সেই হিসেবে তাদের পাসের হার একদিক দিয়ে আশাব্যাঞ্জক। কোভিডের আগের সময়ের পাসের হারের সাথে তুলনা করলেও কিন্তু এবার শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে।

“সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবার পরীক্ষা হয়েছে। লার্নিং গ্যাপ আছে। সে কারণে এই ঘাটতি পূরণের জন্য শিক্ষার্থীরা যখন কলেজে উঠবে, তখন বেশ কিছু স্ট্যাটেজি হাতে রাখতে হবে। অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট বেইজ লার্নিংয়ের মাধ্যমে ঘাটতি মেটাতে হবে।”

তার ধারণা, শিখন ঘাটতি পূরণের যে বিষয়গুলো ছিল মানবিকের শিক্ষার্থীদের জন্য তা খুব বেশি কার্যকরী না হওয়ায় তাদের ফল খারাপ হয়েছে।

“এসব ক্ষেত্রে সিলেবাস কমিয়ে প্রস্তুতি নেওয়াটা ভুল সিদ্ধান্ত। আসলে মূল বিষয়গুলো ধরে আগাতে হয়। নইলে গ্যাপ থেকে যায়। তাই অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক ও প্রজেক্টভিত্তিক কাজগুলো শিক্ষার্থীদের দেওয়া খুব জরুরি। এতে তাদের রিকভার হয়ে যাবে।"

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করেন, গণিত-ইংরেজি পরীক্ষা হওয়ায় এবার গতবারের চেয়ে কিছুটা ফলাফল খারাপ হয়েছে।

“প্রতিবছরের ফল যদি আমরা ব্যাখ্যা করি, তাহলে দেখব, গণিতে ফল সেরকম আশানুরূপ হচ্ছে না। কারণ অনেক স্কুলে গণিতের শিক্ষকরা ক্লাসে সেরাটা দেন না, কারণ তারা সেটা প্রাইভেট পড়ানোর জন্য রেখে দেন। আবার অনেক স্কুলের গণিতের শিক্ষকরা তেমন বোঝেন না। ফলে তার পক্ষে শিক্ষার্থীদের সেভাবে শেখানোও সম্ভব না।”

তবে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হইচই না করে যেসব স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা খারাপ ফল করছে, সেদিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

“কেন ফলাফল খারাপ করছে, সেদিকে দেখতে হবে। আমরা পরিসংখ্যানে জোর না দিয়ে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার যে বিভাজন আছে, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। শিক্ষকরা ঠিকমতো পড়াচ্ছেন কিনা, যে বিষয়গুলো তারা পড়াচ্ছেন, তাতে তাদের প্রশিক্ষণ আছে কিনা এই বিষয়গুলোও গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে থাকা উচিৎ।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষকদের পেছনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছি না। তাহলে কেন আমরা প্রাথমিকের শিক্ষককে দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির মর্যাদা দিই? এরা সবাই তো প্রথম শ্রেণিতে যাওয়ার কথা ছিল।

“বিনিয়োগ বাড়িয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাদের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে, যেন ভালো মানের শিক্ষকরা এ পেশার প্রতি আগ্রহী হয়।”

কোথায় কেন পরীক্ষার ফল খারাপ হল, তা অনুসন্ধানের পাশাপাশি শিক্ষার মান বাড়ানোর উপরই জোর দিচ্ছেন মনজুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, কোনো এক বছরের রেজাল্ট কোনো বছরের মেধার অবনতি বা উন্নতির প্রকাশ ঘটায় না। এই সিস্টেম দীর্ঘদিন ধরেই চলতে থাকে। কোন অঞ্চলে কেন পড়াশুনাটা কম?

“আমি জানি, সিলেটে হাওর অঞ্চল হওয়ায় সেখানে পড়াশুনাটা কম। সেখানে শিক্ষার মান কম। সেখানে ফোকাস করে সরকারের উচিৎ পড়াশুনার মান বাড়ানো। পরীক্ষা মেধার বিকাশে কোনো মাপকাঠি নয়। একজন শিক্ষার্থীর মেধার বিকাশের মাপকাঠি হচ্ছে তার সক্ষমতা, তার আত্মশক্তি। সেটা আমাদের নেই।”