দুর্যোগ কবলিত এলাকায় পরে পরীক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

সিলেটে বন্যার কারণে এবার এসএসসি পরীক্ষা পেছাতে হয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2022, 03:22 PM
Updated : 28 Nov 2022, 03:22 PM

ভবিষ্যতে বন্যা কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয় কবলিত এলাকা বাদ রেখে পাবলিক পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

এবছর সিলেটে বন্যার কারণে এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার এই পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামীবার থেকে যদি কোথাও এ ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বা অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে, কোনো একটা বা দুটো জায়গায় বা কিছু জায়গায় পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া সম্ভব না হয়, শুধু সেখানকার পরীক্ষা স্থগিত রেখে, বাকি দেশে পরীক্ষা সময়মতো চলবে, তাদের পরীক্ষাটা আমরা উপযুক্ত সময়ে নিয়ে নেব।”

দেশে সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পুরো শিক্ষাসূচি পাল্টে যাওয়ায় গত বছর সাড়ে আট মাস পিছিয়ে নভেম্বরে এ পরীক্ষা নেয় সরকার।

একই কারণে এবার সাড়ে চার মাস পিছিয়ে গত ১৯ জুন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। বিভিন্ন সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সে পরীক্ষা শুরু হল আরও তিন মাস পর।

ছোট অঞ্চলে বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে পরীক্ষা পেছানোর সুযোগ থাকলেও বড় অঞ্চলে হলে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যাবে না বলেও স্বীকার করেন দীপু মনি।

তিনি বলেন, “এটার যদি খুব ব্যাপকতা থাকে, তখন হয়ত সেভাবে করা যাবে না। কিন্তু যদি দুটা-চারটা-পাঁচটা জায়গায় হয়, অধিকাংশ বোর্ড ‘আনএফেক্টেড’ (আক্রান্ত না) থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা নিয়ে নিতে পারব। যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন বোর্ডে ভিন্ন প্রশ্ন হয়।”

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে সমস্যা সমস্যা কম হলেও মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ভাগাভাগি করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জটিলতার কথাও বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

“কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড যেহেতু সারা দেশে বিস্তৃত, তাদের ক্ষেত্রে ওই সমস্যাটা হয়ে যায়। তাদের আবার নতুন করে প্রশ্ন করা থেকে শুরু করে নতুন করে পরীক্ষা ঠিক করতে হয়। নতুন করে আবার প্রশ্ন করলে, যেটা হয়, একই মান রাখা অনেক সময় সেটায় হয়ত কিছু ব্যত্যয় ঘটতে পারে।”

বিপর্যয়ের কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটার কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “পরীক্ষার একটা ‘ফ্লো’ (ধারাবাহিকতা) থাকে। আমরা তৈরি হতে থাকি। একটা সময় ঠিক করা থাকে। একটা রুটিন ঠিক করা থাকে। হঠাৎ সেটাতে ব্যত্যয় ঘটে গেলে তখন কিন্তু সমস্যা হয়। সবারই হয়।”

আগামী বছর পরীক্ষা স্বাভাবিক সময়ের কাছাকাছি নিয়ে আসার ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী বছর আমরা চেষ্টা করব, স্বাভাবিক সময়ের যত কাছাকাছি নিয়ে আসা যায়। কতটুকু পারব, এই মুহূর্তে বলা শক্ত। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে, যতটা সম্ভব সামনে নিয়ে আসার।

“কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অন্য কোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি হলে আমরা স্থানীয় পর্যায়ে পরীক্ষা বন্ধ রেখে বাকি পরীক্ষাগুলো চালু রাখব। এই রকম নানান ব্যবস্থা আছে।”

সোমবার ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলন করেন দীপু মনি।