Published : 27 Apr 2025, 09:07 PM
মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্ত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় ‘নিজেদের স্বার্থেই’ তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এ কথা আমরা অফিসিয়ালিও বলেছি যে, বাংলাদেশের সীমান্তের পরিস্থিতিতো পরিবর্তিত হয়ে গেছে। এটাতো আমরা অস্বীকার করতে পারব না। এখানে (মিয়ানমারের) নন-স্টেট অ্যাক্টরের নিয়ন্ত্রণে আমাদের সম্পূর্ণ সীমান্ত রয়েছে। (দেশটির) কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই সীমান্তে।
“কাজেই, আমাদের নিজের স্বার্থেই কোনো না কোনো ধরনের যোগাযোগ… আমরা অফিসিয়াল যোগাযোগ অবশ্যই করতে পারি না একটা নন-স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে; কিন্তু আমরা চাইলেও একেবারে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারব না। সেক্ষেত্রে যতটুকু প্রয়োজন সেটা আমরা নিশ্চয় করব।”
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতের মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের লাগোয়া রাখাইন রাজ্যের পুরোটা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। শুধু এ রাজ্যের কায়ুকফায়ু সমুদ্রবন্দরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পেরেছে সামরিক জান্তা।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের জন্মভূমি রাখাইনে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা গত সাত বছরেও ফলপ্রসূ হয়নি। এর মকধ্যে গত ডিসেম্বরে প্রথমবারের মত আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত রাখাইনে মানবিক সহায়তা চ্যানেল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার।
আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে জড়িয়ে যাচ্ছে কি-না, এমন প্রশ্ন করা হয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে।
জবাবে তিনি বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমাদের জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি হলো পরে। কিন্তু মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাততো আমাদের স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কারণ মিয়ানমারের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী আমাদের দেশের আশ্রয় নিয়ে আছে এবং তাদেরকে আমরা ফেরত পাঠাতে চাই।
“সেই ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের যা কিছু করা প্রয়োজন, সেটাতো আমাদেরকে করতে হবে। কারণ, আমাদের স্বার্থ সেখানে সংশ্লিষ্ট আছে।”
রাখাইনে মানবিক সহায়তা চ্যানেল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি এটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এটাতে সম্মত। কারণ, মানবিক প্যাসেজ হবে।
“কিন্তু এটাতে আমাদের কিছু শর্ত আছে, সেটার বিস্তারিততে যাচ্ছি না, সেই শর্তাবলী যদি পালিত হয়, আমরা এটাতে অবশ্যই সহযোগিতা করব, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবশ্যই।”
বান্দরবান সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে আরাকান আর্মির উৎসব করার বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এটা নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কথাবার্তা হয়েছে এবং আমি যতটুকু জানি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছেন। আমি ওভারল্যাপ করতে চাই না, দেখা যাক কী দাঁড়ায়।”