যুক্তরাষ্ট্রের একদল নির্বাচন পর্যবেক্ষক সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের এ কথা বলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।
Published : 30 Jul 2023, 07:40 PM
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বলেছেন, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেট ফিন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক টেরি এল ইসলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে জানতে চাইলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কী কী প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার যারা নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকেন; দক্ষতায়, বিজ্ঞতায় এবং তাদের প্রফেশনালিজমে তারা অত্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন।
“যে কোনো ইলেকশন কনডাক্ট (পরিচালনা) করার জন্য সব ক্ষমতা রয়েছে। একাত্তরের পর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো ইলেকশন হয়েছে তারা এগুলো কনডাক্ট করেছে। আর সবচেয়ে বড় কথাটা হল, এখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা থাকবে না ইলেকশনের সময়। মুখ্য ভূমিকায় চলে যাবে নির্বাচন কমিশন।”
মন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই সিকিউরিটি ফোর্সগুলো থাকবে, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থাকবে। আমরা একটুও বলেছি, সেই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাউকে বদলিও করতেও পারবে না, কাউকে আবার পদায়নও করতে পারবে না। কাজেই সমস্ত কিছু নির্বাচন কমিশনই পরিচালনা করবে।”
পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত পর্যাপ্ত লোকবল পুলিশ বাহিনীতে আছে কি না, সে প্রশ্নও রেখেছিলেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা।
মন্ত্রী বলেন, “আমরা জানিয়েছি, আমাদের পুলিশ ফোর্সের সঙ্গে একটা অক্সিলাজি ডিসিপ্লিন ফোর্স রয়েছে, যেটা নাকি বিগত দিনগুলোতে ইলেকশন করে রয়েছে, তাদের পরিমাণ এক মিলিয়নের মত তৈরি আছে, তারা ইলেকশন কনডাক্ট করার জন্য তৈরি রয়েছে। আমাদের পুলিশ ফোর্সের পাশাপাশি তারা, বিজিবি, কোস্টগার্ড সবাই তৈরি রয়েছে। ইলেকশন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে এবং ফ্রি, ফেয়ার ও ভালোলেন্স ফ্রি একটা ইলেকশন হয় সেজন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
“তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গেছেন। তারা জানতে চেয়েছিলেন, আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সেই ধরনের দক্ষতা আছে কিনা? আমাদের অতিরিক্ত আইজিপি সমস্ত কিছু তাদের বিশ্লেষণ করে বলেছেন, পুলিশ নির্বাচনের সময় কীভাবে ডিউটি করে।”
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচনী প্রস্তুতিটা কী রকম আছে সেটি জানতে তারা এসেছিলেন। আমরা তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের প্রস্তুতি সবই আছে, নির্বাচন কমিশন যেদিন থেকে তফসিল ঘোষণা করবে, সেদিন থেকে পুরো ফোর্স তাদের অধীনে চলে যাবে। অ্যাডমিন থেকে যা কিছু আছে সবই নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে, এটিই তাদের বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে।
“নির্বাচনের দিন কীভাবে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা হবে, সেখানে এক্সিকিউটটিভ ম্যাজেস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট টিম করে ঘুরবেন। যেখানেই কোনো অসঙ্গতি দেখবেন, সেখানেই তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এসব কিছু আমরা তাদের বিস্তারিতভাবে জানিয়েছি।”
শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতের মধ্যে পুলিশ বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমানউল্লাহ আমানকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে। সরকার ‘মার্কিন ভিসা নীতি থেকে বাঁচতে’ এটা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নিয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
জবাবে তিনি বলেন, “আমেরিকার ভিসা নীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, সেখানে আর আমাদের কিছু বলার নেই। আমেরিকার ভিসা নীতি আমাদের মুখ্য নয়। আমাদের দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাই আমাদের প্রাধান্য, সেটাই আমাদের কাছে মুখ্য।
“আমানউল্লাহ আমান রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন, সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। একইভাবে গয়েশ্বর রায়কেও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদার অব হিউম্যানিটি। দুই নেতা যখন গতকালকে পড়ে গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী খোঁজখবর নিয়েছেন তাদের চিকিৎসা ঠিকমত হচ্ছে কিনা সেই খোঁজখবর নিয়েছেন। আমরা তাদের অ্যারেস্ট করিনি, সুস্থ হওয়ার পর তারা বাড়িতে চলে গেছেন।”