‘সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ করার অভিযোগে ২০২২ সালের ২৭ অগাস্ট গ্রেপ্তার হন খাদিজা।
Published : 16 Nov 2023, 02:33 PM
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
এর ফলে ১৪ মাস ধরে কারাগারে আটক এই শিক্ষার্থীর মুক্তিতে আর বাধা থাকছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
হাই কোর্ট খাদিজাকে জামিন দিলেও রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের আবেদন করায় তার মুক্তি মিলছিল না। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেওয়ায় সেই বাধা কাটল।
খাদিজার পক্ষে আপিল বিভাগে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট বি এম ইলিয়াস কচি ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম।
আইনজীবী কচি পরে সাংবাদিকদের বলেন, “খাদিজা ১ বছর দুই মাস ১৭ দিন যাবত কারাগারে আছেন। আপিল বিভাগ তাকে জামিন দিয়েছেন। এখন তার মুক্তিতে বাধা নেই।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতেন। সেখানে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ করার অভিযোগে ২০২০ সালে খাদিজা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয় কলাবাগান ও নিউ মার্কেট থানায়।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা ওই দুই মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একই রকম। মামলার দুই বছর পর ২০২২ সালের ২৭ অগাস্ট খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। তখন থেকে কারাগারে আছেন এই শিক্ষার্থী।
জবি শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন আরও চার মাস স্থগিত
জবি শিক্ষার্থী খাদিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে’ দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর’ অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের’ প্রয়াস চালাচ্ছেন।
গত বছর গ্রেপ্তার হওয়ার পর অধস্তন আদালতে খাদিজার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১০ জুলাই বিষয়টি আপিল বিভাগে ওঠে। পরে আদালত বিষয়টি চার মাসের জন্য মুলতবি করে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় হাই কোর্টের জামিন আদেশই বহাল থাকল।