প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
Published : 10 Jul 2023, 02:39 PM
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করেছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
ফলে গত নয় মাস ধরে কারাগারে থাকা কুবরার মুক্তির কোনো আশা আপাতত থাকল না।
আদালতে কুবরার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কুবরা একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতেন। সেখানে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের’ অভিযোগে ২০২০ সালে কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউ মার্কেট থানায় দুটি মামলা হয়।
গত বছর গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিচারিক আদালতে কুবরার জামিন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার বিষয়টি আপিল বিভাগে ওঠে। পরে আদালত বিষয়টি চার মাসের জন্য মুলতবি করে।
কুবরার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “শুনানিতে বলা হয়েছে, কুবরা ইউটিউব চ্যানেলে উপস্থাপনা করতেন। সেখানে অতিথিরা যা বলেছেন, এর দায় তার নয় ।তখন আপিল বিভাগ বলেছে, নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে টকশোতে ইন্টারভিউয়ের জন্য কাউকে ডাকলে সেই ব্যক্তি যা বলবেন, তার দায়িত্ব কেন কুবরা নেবেন না? যে বক্তব্যের জন্য এ মামলা, সেখানে কুবরা কিছু বোঝে না, এটা বলা যায় না। কারণ সে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।“
এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা ওই দুই মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একই রকম। মামলার দুই বছর পর ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। তখন থেকে কারাগারে আছেন এই শিক্ষার্থী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, “খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।“
আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়ার ভাষ্য, তার মক্কেলের (কুবরা) নামে ২০২০ সালে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়, তখন তিনি ১৭ বছর বয়সী। অথচ তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে মামলাটি করা হয়।
এছাড়া কিডনির সমস্যায় ভুগলেও কুবরার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে বলে জানান জ্যোর্তিময়।