"সাইফের জন্মের প্রথম ছয় বছর আমি প্রায় দুই শিফটে কাজ করতাম রোজ. মা হিসেবে ওকে একেবারেই সময় দিতে পারিনি তখন।"
Published : 18 May 2024, 10:12 AM
তের বছর বয়সে প্রথম চলচ্চিত্র আর পঁচিশ বছরে বিয়ে। বিয়ের কিছুদিন পরই সংসারে আসে ছেলে সাইফ আলী খান। কিন্তু ক্যারিয়ারে তখন দূরন্ত গতি। তাই মুম্বাইয়ের পতৌদি নবাব পরিবারের পুত্রবধূ শর্মিলা ঠাকুর শিশু সন্তানকে সেভাবে সময় দিতে পারেননি। আর এই বিষয়টিকে নিজের ভুল বলেই মনে করেন তিনি।
সেই দুঃখ-অনুতাপের কথা শর্মিলা শুনিয়েছেন এতকাল বাদে।
হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, আশি বছর বয়সী শর্মিলা এবারের মাদার্স ডেতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাইফের জন্মের পর প্রায় ৬ বছর ছেলেকে একেবারেই সময় দিতে পারেননি তিনি।
তখন প্রায় দুই শিফটে কাজ করতে হত জানিয়ে শর্মিলা বলেন, “যখন সাইফ জন্মেছিল তখন আমি ভীষণ ব্যস্ত। সাইফ যখন বড় হচ্ছে, ওর জন্মের প্রথম ছয় বছর আমি প্রায় দুই শিফটে কাজ করতাম রোজ। মা হিসেবে ওকে একেবারেই সময় দিতে পারিনি তখন।
“আমি খালি ওর প্যারেন্ট টিচার মিটিংয়ে যেতাম, নাটক দেখতে যেতাম ওর, ব্যাস। কিন্তু পুরোদমে একজন মায়ের যা কাজ সেটা করিনি। আমার স্বামী (ক্রিকেটার মনসুর আলী খান) করেছেন কিন্তু আমি ছিলাম না।”
আর দশজন মায়ের মত শর্মিলারও ইচ্ছে ছিল ছেলের সব যত্নআত্তি নিজে হাতে করার।
“আমি চেয়েছিলাম সাইফকে নিজের হাতে খাওয়াতে, চান করাতে। কিন্তু পেন্ডুলামের আরেক দিকেরও তো গল্প থাকে। আমি পারিনি কিছুই করতে। সত্যি বলতে অনেক ভুল করেছি।”
তবে মাকে না পেলেও তার ছেলে যে সঠিকভাবে মানুষ হয়েছে বড় হয়েছে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই অভিনেত্রীর। এজন্য পুরো কৃতিত্ব তিনি তার স্বামীকেই দেন। তবে ছেলের বেলায় যে ভুল তিনি করেছেন মেয়েদের সময় সেটি করেননি।
শর্মিলা ঠাকুর এবং মনসুর আলি খানের তিন সন্তান। তারা হলেন-সাইফ আলি খান, সাবা পতৌদি এবং সোহা আলি খান।
ছেলে সাইফ পুরোদস্তুর অভিনেতা। দুই মেয়ের মধ্যে নিয়মিত না হলেও সোহা আলী খান অভিনয়ে আছেন। আর পর্দার বাইরের মানুষ সাবা। সাইফের স্ত্রী হলেন বলিউডের কাপুরদের মেয়ে কারিনা কাপুর।
সত্যজিতের ‘অপুর সংসার’ করার পর শর্মিলাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ‘কাশ্মীর কী কলি’র মধ্য দিয়ে বলিউডেও নিজের জায়গা করে নেন তিনি।
এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘অনুপমা’, ‘অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস’, ‘আরাধনা’, ‘দাগ’, ‘চুপকে চুপকে’র মত সুপারহিট সিনেমায়।
মাঝে অভিনয় থেকে বিরতি নিলেও আবার অভিনয়ে ফিরে এসেছেন ৮০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। কাজ করছেন কলকাতার নির্মাতা সুমন ঘোষের সিনেমায়। সেখানে তার মেয়ের চরিত্রটি করছেন কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।