অবরোধের কারণে অন্তত ১৫টি ট্রেন ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
Published : 16 Jul 2023, 03:36 PM
চাকরি স্থায়ী করার দাবি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন কর্মচারী নিয়োগের প্রতিবাদে আন্দোলনরত অস্থায়ী শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেওয়ায় চার ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। আন্দোলনকারীরা রেলপথ ছেড়ে রেলভবনে যাচ্ছেন।"
এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে কয়েকশ শ্রমিক ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকবৃন্দ’ ব্যানারে কাওরানবাজারে এফডিসি সংলগ্ন রেলগেইটে অবস্থান নিলে নারায়ণগঞ্জ বাদে সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) সরদার শাহাদাত আলী সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মগবাজারে রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারীরা অবস্থান নিয়েছে। তাদের কিছু বেতন বাকি আছে। এছাড়া চাকুরি স্থায়ীকরণের দাবি আছে। এ কারণে তারা রেললাইনের ওপর বসে পড়েছে। ঢাকা থেকে ট্রেন যেতে পারছে না, আসতেও পারছে না।”
অবরোধের কারণে অন্তত ১৫টি ট্রেন ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে বলে রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা খায়রুল কবির সে সময় জানান।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী রেল শ্রমিক সাহাবুদ্দিন মুন্না বলেন, “আমাদের চাকরির বয়স ৬ বছর। এখনো স্থায়ী করা হয়নি। অথচ অস্থায়ী ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে নতুন করে কর্মচারী নিয়োগের ঘোষণায় আমরা এই প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
সাহেদ আলী নামে আরেক শ্রমিক বলেন, “আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।”
এদিকে অবরোধের কারণে একতা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস, রাজশাহী কমিউটার, চট্টল এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ট্রেন কমলাপুর স্টেশনে আটকা পড়ে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
অবরোধ কখন উঠবে সেই নিশ্চয়তা না পাওয়ায় অনেকে যাত্রা বাতিল করে টিকেট ফেরত দেন স্টেশনে।
ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য এসেছিলেন রুহুল আমিন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বেলা সোয়া ১১টার জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের টিকেট কেটেছিলেন তিনি। কিন্তু বেলা দেড়টা পর্যন্ত ট্রেন না ছাড়ায় তিনি টিকেট ফেরত দিয়ে বাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
একতা এক্সপ্রেসে দিনাজপুরগামী যাত্রী হোসনে আরা বেগম বলেন, “ছাড়ার কথা ১০টায়। আমরা সাদে ৯টায় এসে বসে আছি, কিন্তু ট্রেন ছাড়ে না। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কি যে ভোগান্তিতে পড়েছি।"
পরে সেই ট্রেন ছেড়ে যায় বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে। ধীরে ধীরে অন্যান্য ট্রেনও ছাড়বে বলে রেল কর্মকর্তারা জানান।