“প্রয়োজন হলে সামরিক বাহিনী তলব করতে হবে এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আগেই গ্রেপ্তার করতে হবে, যাতে কেউ অতীতের মত কোনো সন্ত্রাস বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে,” বলেন তিনি।
Published : 27 Oct 2023, 01:13 AM
ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত ৬২টি নির্বাচনী এলাকায় ‘ভোটদানে বাধা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ আশঙ্কা প্রকাশ করে সেসব এলাকায় আগেই কঠোর সতর্কতা ও নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে ‘শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন: সরকার ও রাজনৈতিক দলসমূহের নিকট প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তার এ আহ্বান আসে।
সেখানে শাহরিয়ার কবির বলেন, “ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত ৬২টি নির্বাচনী এলাকা আমরা চিহ্নিত করেছি, যেখানে অতীতে নির্বাচনকালে নির্বাচকমণ্ডলীকে বিভিন্নভাবে ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই ৬২টি এবং সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটতে পারে এমন সব নির্বাচনী এলাকা পূর্বাহ্নেই কঠোর সতর্কতা ও নজরদারিতে আনতে হবে।
“প্রয়োজন হলে সামরিক বাহিনী তলব করতে হবে এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আগেই গ্রেপ্তার করতে হবে, যাতে কেউ অতীতের মত কোনো সন্ত্রাস বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বানচালের ষড়যন্ত্র’ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, “ধর্মীয়, জাতিগত এবং রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সকল নির্বাচক যেন নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
“কোনো ভোট কেন্দ্রে সন্ত্রাস বা গোলযোগের ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে সেই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত রাখতে হবে এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জনমত গঠনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠন করেন এবং ২০২৪ সালে আমরা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
“যে কোনো মূল্যে আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে কেননা বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা পেশী ও অর্থশক্তি দিয়ে তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চাইবে। তরুণদের প্রতি আমার আহ্বান– তাদের চক্রান্তে কোনোভাবেই পা বাড়াবেন না এবং অনলাইন ও অফলাইনে তাদের প্রপাগান্ডা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।”
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারাই বিদেশিদের সঙ্গে নিয়ে আসন্ন নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। কারণ ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি বিএনপি-জামায়াত কীভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন করেছে। আসন্ন নির্বাচনে যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকতে হবে।”
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “সংবিধানের ধারা রক্ষা করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। কাউকে নির্বাচনে আনার জন্য কারো মাথাব্যথা নেই, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও নয়। নির্বাচনে কতজন এল বা কতজন মানুষ উপস্থিত হলো সেটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি নয়। সুতরাং এটা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।”
অন্যদের মধ্যে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী আরমা দত্ত, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
সভা সঞ্চালনা করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আইটি সেলর সভাপতি আসিফ মুনীর।