ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা কোথায়, জানতে চায় হাই কোর্ট

৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গত বছরের এপ্রিলে এই রিট আবেদন করেছিলেন ই-অরেঞ্জের ৫৪৭ গ্রাহক।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2023, 08:45 AM
Updated : 21 May 2023, 08:45 AM

ই-কমার্স কোম্পানি ই-অরেঞ্জের মাধ্যমে গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ মাথায় নিয়ে ভারতে লাপাত্তা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা এখন কোথায় আছেন তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

সেইসঙ্গে তাকে ফেরাতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চেয়েছে আদালত; আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে জানাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন।

গ্রাহকদের ৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি কত টাকা বিদেশ পাচার করা হয়েছে তা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালের ৩ এপ্রিল রিট আবেদনটি করেছিলেন ই-অরেঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত আফজাল হোসেন, আরাফাত আলী, তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও হাবিবুল্লাহ জাহিদসহ ৫৪৭ গ্রাহক।

দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সেখানে বিবাদী করা হয়।

ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার ভাই বনানী থানার সাবেক পরিদর্শক সোহেল রানা, বিথি আক্তারসহ কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্তদের ব্যাংক হিসাবসহ কার কোথায় কত ব্যক্তিগত সম্পদ আছে, তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয় সেই আবেদনে।

২০২২ সালের ৭ এপ্রিল ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ই-কমার্স কোম্পানি ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চায় হাই কোর্ট। সেইসঙ্গে টাকা পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চেয়ে রুলসহ আদেশ দেয় আদালত।

সেইসঙ্গে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত করে যারা বিদেশে পাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কেন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চায় আদালত। পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করে গ্রাহকদের কেন ফেরত দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।

এ ব্যাপারে পরবর্তী ৪ মাসের মধ্যে বিষয়গুলো প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডকে।

গত ২৯ জানুয়ারিও সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে আদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। ওই আদেশের পর
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সোহেল রানা ভারতের কারাগারে ছিলেন। জামিন পেয়ে কারামুক্ত হয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলার দুদিন পর ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভারত-নেপাল সীমান্তে বিএসএফের হাতে সোহেল রানার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর আসে ভারতের সংবাদমাধ্যমে। পরে দেশটির পুলিশও তা নিশ্চিত করে।

অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে সেদেশে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর সোহেল রানার ভারতের কারাগারে আটক থাকার খবর আসে। যদিও চলতি বছরের শুরুর দিকে খবর আসে সোহেল রানা ভারতের আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়েছেন।

আরও পড়ুন-

Also Read: ই-অরেঞ্জ: টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা, জানতে চায় হাই কোর্ট

Also Read: ভারতে আটক পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা বরখাস্ত

Also Read: ‘দালাল ধরে’ ভারতে পালান পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা

Also Read: ই-অরেঞ্জ: টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা, জানতে চায় হাই কোর্ট

Also Read: ই-অরেঞ্জ: ৭৭ কোটি টাকা ফেরতে রিট আবেদনে আদেশ বুধবার

Also Read: ই-অরেঞ্জ: ভারতে গ্রেপ্তার পুলিশ পরিদর্শক সোহেলকে ফেরাতে উদ্যোগ

Also Read: ই-অরেঞ্জের সোহেল রানার পালানোর বিষয়ে ‘জানে না’ ঢাকার পুলিশ