ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, আসামিদের বিষয়ে ‘ভালো’ তথ্য তারা পেয়েছেন।
Published : 20 Nov 2022, 11:14 PM
ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা করেছে; সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ জনকে নিয়েছে হেফাজতে।
রোববার দুপুরে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দুই জঙ্গিকে তাদের সহযোগীরা ছিনিয়ে নেওয়ার পর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন আকন্দ।
এরপর সেই মামলায় আগের মামলার ১০ আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতে ঢাকার হাকিম আদালতে আবেদন করা হয়।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন আসামিদের ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আদেশ দেন বলে আদালতের পুলিশের তথ্য ও প্রসিকউশন বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদদীন জানিয়েছেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- শাহিন আলম, শাহ আলম, বিএম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, খায়রুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ, আব্দুস সবুর ও রশিদুন্নবী।
এদের মধ্যে আরাফাত ও সবুরকেও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
তবে জঙ্গিরা মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিতে পারলেও আরাফাত ও সবুরকে ছাড়াতে পারেনি।
মইনুল ও সোহেল প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যামামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। মোহাম্মদপুর থানায় করা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলার শুনানির জন্য তাদের সবাইকে রোববার আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
আরাফাত ও সবুর এই ছিনতাই পরিকল্পনায় জড়িত বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
দুই জঙ্গি পালানোর পর ‘রেড অ্যালার্ট’, পুরস্কার ঘোষণা
জঙ্গি ছিনতাই: পুলিশের দুর্বলতা না অবহেলা?
ডিএমপি কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, “আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ শুরু হয়েছে এবং এ ঘটনায় কারা এসেছিল ছিনতাই করতে, তাদের সম্পর্কে ভালো তথ্য পেয়েছি। তাদের নাম পেয়েছি, অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারব।”
দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার ওই মামলায় হাজিরা শেষে আসামিদের হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশের মুখে কোনো রাসায়নিক স্প্রে করে দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে মোটর সাইকেলে চলে যায় তাদের সহযোগীরা।
এই জঙ্গিরা নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। সোহেলকে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মইনুল গ্রেপ্তার হন এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ অগাস্ট টঙ্গীতে।
রোববার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হাজিরা শেষে দুই জঙ্গিকে স্বল্প দূরত্বের আরেক ভবনে স্থাপিত হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল হাঁটিয়ে। তারা আদালতের মূল ফটকে পৌঁছাতেই আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরা পুলিশ সদস্যের মুখে স্প্রে করে, হামলা চালায়। পরে অপেক্ষমান আরেকজনের মোটরসাইকেলে উঠে পালিয়ে যায় দুই জঙ্গি।
এর আগে ২০১৪ সালে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের চলন্ত প্রিজন ভ্যান আটকে গুলি-বোমা ছুড়ে এক পুলিশকে মেরে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তাদের সহযোগীরা।
তখন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন ওরফে সানি ও রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ এবং জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান।
রাকিবুল পরে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। ২০১৮ সালে মিজান ভারতের বেঙ্গালুরুতে ধরা পড়েন। সালেহীনের কোনো খবর আর মেলেনি।