মৌলভীবাজার, বরিশাল, ভোলা ও কুমিল্লা জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ।
Published : 23 Jan 2024, 10:06 AM
দেশের চার বিভাগে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জে থার্মোমিটারের পারদ নেমেছে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। চলতি শীত মৌসুমে তাপমাত্রা এতটা আর কখনো নামেনি।
এই সময়ে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকার জন্য এটাও মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, মঙ্গলবার মৌলভীবাজার, বরিশাল, ভোলা ও কুমিল্লা জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
“আজ সূর্যের দেখা মেলায় তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা থাকবে। তাতে কিছু কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হবে এবং কিছু কিছু জায়গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করবে ।পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমলেও রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।”
দেশের বড় এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামে দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এর আগে ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি দিনাজপুরে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার রেকর্ড রয়েছে। স্বাধীনতার আগে ১৯৬৮ সালে শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি রেকর্ড রয়েছে।
তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে, কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত চলতে পারে কুয়াশার দাপট। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে বি্ঘ্ন ঘটতে পারে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃষ্টির পর ফের কমতে পারে রাতের তাপমাত্রা।
এবারের শীত মৌসুমে ডিসেম্বরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে বেড়েছে শীতের দাপট।
কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার খবরও মিলছে প্রায় প্রতিদিনই। শীতের দাপটে ঠাণ্ডাজনিত অসুখবিসুখে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে।
পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে সকাল ১০টায়।
পুরনো খবর