মোমেন কেন এখনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী? আদেশ চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন

ভারতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী দল থেকে মোমেনের বাদ পড়ার দিনই এ রিট আবেদন হল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2022, 06:34 PM
Updated : 5 Sept 2022, 06:34 PM

প্রথমে উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছিল, এবার করা হল হাই কোর্টে আবেদন, যাতে চ্যালেঞ্জ করা হল এ কে আব্দুল মোমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে থাকা।

সরকারকে ক্ষমতায় ‘টিকিয়ে’ রাখতে ভারতকে অনুরোধ করা নিয়ে বক্তব্যের কারণে মোমেনের বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এই রিট আবেদনটি হয়েছে।

মোমেন কোন কর্তৃত্ববলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে আছেন, তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এই আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন রাশেদ।

তার পক্ষে আইনজীবী কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সোমবার এ আবেদনটি দায়ের করেন।

এদিনই প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর শুরু করেন, তার সফরসঙ্গীর তালিকায় মোমেনের নাম থাকলেও শেষ সময়ে তিনি বাদ পড়েন। তার না যাওয়ার বিষয়ে সরকারি কোনো ভাষ্য না এলেও এজন্য তার সেই বক্তব্যকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রিট আবেদনটি শুনানির জন্য মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাই কোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় রয়েছে।

আহাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগের নোটিসের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে উনার পদে থাকার বৈধতা নিয়ে এই রিট করা হয়েছে। আগামীকাল এর ওপর শুনানির জন্য তা আদালতের কার্যতালিকায় রয়েছে।”

Also Read: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে উকিল নোটিস

Also Read: পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নোটিস পাঠানোর পর হুমকি পাচ্ছি: আইনজীবী

Also Read: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর থেকে বাদ পড়লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মোমেন অবশ্য এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যে কথা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি ভারতে গিয়ে তেমন কিছু বলেননি।

যদিও গত ১৮ অগাস্ট চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে … শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা অনুরোধ করেছি।”

তার এই বক্তব্য নিয়ে তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অভিযোগ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্য দেশের সার্বভৌমত্বকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ করেছে। বিএনপির পক্ষ থেকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করা হয়।

এরপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মোমেনের ওই বক্তব্য তার ‘নিজস্ব’, সরকার কাউকে এরকম কোনো দায়িত্ব দেয়নি।

এর মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের কারণে ‘শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লংঘনের’ অভিযোগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ২১ অগাস্ট রেজিস্ট্রি ডাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঠিকানায় উকিল নোটিস পাঠান আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে ওই উকিল নোটিস পাঠানোর পর হুমকি পাওয়ার অভিযোগ করেন আইনজীবী রাশেদ। এ বিষয়ে গত ২৩ অগাস্ট শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।