সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ এসেছিল গত মে মাসে। সেই তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তাকে নিয়ে কোনো মতামত প্রকাশে নিষেধ করা হল এবার।
Published : 14 Jun 2023, 03:40 PM
দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে এবং ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে কোনো ধরনের মতামত প্রকাশ করতে বারণ করেছে হাই কোর্ট।
সালাউদ্দিনের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ও মমতাজ উদ্দিন ফকির। অন্যপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার সুমনের ‘মানহানিকর বক্তব্য’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশনা চেয়ে মঙ্গলবার হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেছিলেন বাফুফে সভাপতি।
বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা তাদের দেওয়া তহবিল খরচে অনিয়ম পেয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে গত এপ্রিল মাসে। সেই সঙ্গে তাকে জরিমানাও করা হয়; এর মধ্য দিয়ে বাফুফের পদ হারান সোহাগ।
এরপর সোহাগের পাশাপাশি বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তা তদন্তে হাই কোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৫ মে অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেয়।
ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
সেই সঙ্গে সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শেদী এবং সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের সকল বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।
আদালতের ওই আদেশের পর সালাউদ্দিন ও বাফুফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রিট মামলার বাদী সুমনও সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন বক্তব্য দেন।
এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার হাই কোর্টে নতুন এই রিট আবেদন করেন বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন, সেখানে গোপনীয়তা রক্ষা এবং যে কোনো ভুয়া তথ্য তৈরি ও প্রচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি একাত্তর টিভিতে কাজী সালাউদ্দিনকে নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে, সেটি সরাতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, একাত্তর টিভি কর্তৃপক্ষ, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে বিবাদী করা হয় আবেদনে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিবাদীদের কাজী সালাউদ্দিন সম্পর্কে কোনো মিথ্যা এবং মানহানিকর বিবৃতি তৈরি বা সম্প্রচার থেকে বিরত রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, এই মর্মে রুলও চাওয়া হয় আর্জিতে।
সে বিষয়ে শুনানি করেই বুধবার আদেশ দিল আদালত। আদেশে বলা হয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের যে নির্দেশ গত মে মাসে হাই কোর্ট দিয়েছিল, সেই তদন্ত শেষ হওয়ার আগে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কোনো মতামত প্রকাশ করা যাবে না। ব্যারিস্টার সুমনকেও এ বিষয়ে মতামত প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাফুফে সভাপতিকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য সরাতে রিট আবেদন
বাফুফে সভাপতিসহ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের নির্দেশ হাই কোর্টের
সালাউদ্দিনসহ বাফুফের ৩ জনের ‘দুর্নীতি’র তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন