‘যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতেন তোয়াব ভাই’

সোমবার দুপুরে তোয়াব খানের কফিন জাতীয় প্রেসক্লাবে নেওয়া হয়, সেখানে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান সাংবাদিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2022, 01:10 PM
Updated : 3 Oct 2022, 01:10 PM

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সাংবাদিক তোয়াব খানকে শেষ বিদায় জানালেন তার নবীন-প্রবীণ সহকর্মীরা, স্মরণ করলেন নানা ভূমিকায় তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বললেন, “তিনি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিতেন। আমরা অবাক হতাম। কাছে থেকে চুপচাপ দেখতাম। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তোয়াব ভাই।”

২০১৬ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক তোয়াব খান গত শনিবার রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। 

সোমবার দুপুরে তার কফিন জাতীয় প্রেসক্লাবে নিয়ে আসা হয়। প্রেসক্লাব ছাড়াও বিএফইউজে, ডিইউজে, শিল্পকলা একাডেমি, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, পিআইবি, ঋষিজসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং জনকণ্ঠ, বাসস, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় সেখানে।

প্রেস ক্লাবে তোয়াব খানের জানাজার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন ও তোয়াব খানের ছোট ভাই ওবায়দুল কবির খান বাচ্চু সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

পরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই জানাজা হয়। ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মতিউর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, সাইফুল আলমসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক, সাংবাদিক সমিতির নেতা শওকত মাহমুদ, ওমর ফারুক, জলিল ভুঁইয়া, জাকারিয়া কাজল, সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং আনিসুল হক, আবদুল কাইয়ুম, সৈয়দ আবদাল আহমেদসহ নবীন-প্রবীণ সাংবাদিকরা অংশ নেন জানাজায়।

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, “সাংবাদিক হিসেবে, সম্পাদক হিসেবে, সংবাদকর্মী হিসেবে এবং কখনও কখনও সরকারি উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে তাকে দেখার সুযোগ হয়েছে।

“আজীবন একজন সক্রিয় সাংবাদিক চিন্তা-মননে; আবার আজীবন একজন বামপন্থি চিন্তাধারার সমর্থক হিসেবে সক্রিয়তার সঙ্গে বেঁচে ছিলেন।”

বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে, সাংবাদিকতার পেশার উৎকর্ষতার ক্ষেত্রে তিনি তার অবদান রেখে গেছেন। আজকে তাকে আমরা হারিয়ে একজন শিক্ষক-গুরুকে হারিয়েছি।”

তোয়াব খান ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক হন তিনি।

তার সাংবাদিকতা শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতা পত্রিকার মধ্য দিয়ে। ১৯৫৫ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক সংবাদে; তিন বছরের মাথায় পত্রিকার বার্তা সম্পাদকও হন। এরপর ১৯৬৪ সালে তোয়াব খান দৈনিক পাকিস্তানে যোগ দেন।

বাংলাদেশে সংবাদপত্র প্রকাশনার জগতে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া দৈনিক জনকন্ঠের শুরু থেকে উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তোয়াব খান। সবশেষ তিনি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।

বাদ আসর গুলশান আজাদ মসজিদে আরেকবার জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রবীণ এই সাংবাদিককে।

আরও খবর:

Also Read: মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিক সাংবাদিক তোয়াব খানকে শেষ বিদায়

Also Read: সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই

Also Read: সাংবাদিক তোয়াব খান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

Also Read: অসুস্থ তোয়াব খানকে দেখে এলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

Also Read: সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই