কুমিল্লার বিচারকের আদালত অবমাননায় সাজা: আপিলের রায় ১২ ডিসেম্বর

হাই কোর্ট গত ১২ অক্টোবর কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সোহেল রানাকে আদালত অবমাননার দায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2023, 07:04 AM
Updated : 6 Dec 2023, 07:04 AM

আদালত অবমাননার দায়ে কুমিল্লার সাবেক মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সোহেল রানার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের রায়ের জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ বুধবার এ দিন ধার্য করে।  

সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও শাহ মঞ্জুরুল হক।

গত ১২ অক্টোবর বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাই কোর্ট বেঞ্চ মো. সোহেল রানাকে আদালত অবমাননার দায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। কুমিল্লার সাবেক এই মুখ্য বিচারিক হাকিম বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন।

গত মঙ্গলবার তিনি আপিল বিভাগে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ওইদিন শুনানির জন্য বুধবার দিন রেখেছিল আদালত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামুন চৌধুরী ও রিয়া আক্তার দম্পতির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে মামুন-রিয়া দম্পতির করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হাই কোর্ট রুল জারি করে এবং মামলার কার্যক্রম চার মাসের জন্য স্থগিত করে। ২০১৯ সালের ৬ মার্চ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট।

ওই স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কুমিল্লার তৎকালীন মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সোহেল রানা গত ১০ এপ্রিল ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।

হাই কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে মামলার কার্যক্রম চালানো এবং অভিযোগ গঠন করায় মো. সোহেল রানার বিরুদ্ধে হাই কোর্টে অভিযোগ করেন আসামি মামুন চৌধুরী।

গত ১৪ অগাস্ট হাই কোর্ট এক আদেশে সোহেল রানাকে তলব করে এবং আদালতের আদেশ অমান্য করার কারণ ব্যাখ্যা করতে ২১ অগাস্ট তাকে হাই কোর্টে হাজির হওয়ার আদেশ দেয়। ধার্য তারিখে তিনি হাই কোর্টে হাজির হন এবং জবাব দাখিল করেন। কিন্তু জবাব ‘সন্তোষজনক না হওয়ায়’ গত ২৮ অগাস্ট সোহেল রানার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ কেন আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেয় হাই কোর্ট। পাশাপাশি ৯ অক্টোবর তাকে হাই কোর্টে হাজির হওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালত অবমাননার রুলের পর গত ৩১ অগাস্ট সোহেল রানা কুমিল্লার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামুন চৌধুরী ও রিয়া আক্তার দম্পতির সেই মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করেন। হাই কোর্টের ধার্য তারিখে হাজির না হয়ে তিনি সময়ের আবেদন জানান। ওইদিন হাই কোর্ট ১২ অক্টোবর রায়ের দিন ঠিক করে।

সে অনুযায়ী বিচারক সোহেল রানা ১২ অক্টোবর হাই কোর্টে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তার প্রার্থনা গ্রহণ না করে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

Also Read: আদালত অবমাননা: বিচারককে সাজা, তিন ঘণ্টা পরই জামিন

হাই কোর্টের সাজার আদেশের পর জামিন আবেদনের পাশাপাশি চেম্বার আদালতের কাছে একটি আবেদন নিয়ে যান বিচারক সোহেলের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

ওইদিন সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম দণ্ডিত মো. সোহেল রানার সাজার রায় ২০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।