মঙ্গলবার এসএসসিতে ইংরেজি প্রথম পত্র, দাখিলে আরবি দ্বিতীয় পত্র এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে গণিত-২ বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে।
Published : 15 Apr 2025, 06:06 PM
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে ৮৩ জন পরীক্ষার্থী ও ১৮ জন পরিদর্শকসহ মোট ১০১ জন বহিষ্কৃত হয়েছেন।
এদিন অনুপস্থিত ছিলেন ২৮ হাজার ৯৪৩ জন পরীক্ষার্থী।
দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার বিকালে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিন এসএসসিতে ইংরেজি প্রথম পত্র, দাখিলে আরবি দ্বিতীয় পত্র এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে গণিত-২ বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিন এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় ১৭ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অংশ নেন ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৯৩ জন। বাকি ২৮ হাজার ৯৪৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানানো হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে।
৩ হাজার ৭১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে বিদেশের ৯টি কেন্দ্র ছাড়া ৩ হাজার ৭০৬টি কেন্দ্রের তথ্য দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
গত ১০ এপ্রিল শুরু হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথম এসএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র, দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম দিনে দেশজুড়ে ২২ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়; আর অনুপস্থিত ছিলেন ২৬ হাজার ৯২৮ জন।
ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় বহিষ্কার ৩১
নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২ হাজার ২৯১টি কেন্দ্রে।
বিদেশের ৯টি কেন্দ্র বাদে ২ হাজার ২৮২টি কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানায়, ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় ৩১ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছেন।
ঢাকা বোর্ডের ৯ জন, রাজশাহী বোর্ডের ১ জন, কুমিল্লা বোর্ডের ৩ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডের ১ জন, বরিশাল বোর্ডের ৪ জন, দিনাজপুর বোর্ডের ৫ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডের ৮ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত হয়েছেন।
নয়টি সাধারণ বোর্ডের এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় ওই ২ হাজার ২৮২টি কেন্দ্রে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৩ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। অংশ নেন ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ৬২৮ জন।
ঢাকা বোর্ডের ৪৩৮টি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৯৬ জন, রাজশাহী বোর্ডের ২৬৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৮৫৬ জন, কুমিল্লা বোর্ডের ২৭৩টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৯৩৯ জন, যশোর বোর্ডের ২৯৯টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডের ২১৯ টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৩৪৮জন, সিলেট বোর্ডের ১৫৪টি কেন্দ্রে ৯৩৪ জন, বরিশাল বোর্ডের ১৯৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ২৫২ জন, দিনাজপুর বোর্ডের ২৮০টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৩৬৭জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডের ১৫৬টি কেন্দ্রে ১ হাজার ২৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় বহিষ্কার ১৯
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিলের আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ১৬ জন পরীক্ষার্থী ও ৩ জন পরিদর্শকসহ মোট ১৯ জন বহিষ্কৃত হওয়ার খবর দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির তথ্য বলছে, ৭২৫টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৯ জন পরীক্ষার্থী আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অংশ নেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮৯ জন। ১০ হাজার ৪৯০ জন অনুপস্থিত ছিলেন। বহিষ্কৃত হয়েছেন ১৬ জন পরীক্ষার্থী ও ৩ জন পরিদর্শক।
ভোকেশনালের গণিত-২ পরীক্ষায় বহিষ্কার ৫১
এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের দ্বিতীয় দিনে গণিত-২ পরীক্ষা ৩৬ জন পরীক্ষার্থী ও ১৫ জন পরিদর্শকসহ মোট ৫১ জন বহিষ্কৃত হওয়ার তথ্য দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৬৯৯টি কেন্দ্রে এদিন এসএসসি ও ভোকেশনালের গণিত-২ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটি জানিয়েছে, এসব কেন্দ্রে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষায় বসেছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৩৯ জন। ২ হাজার ৮২৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন এবং ৩৬ জন পরীক্ষার্থী ও ১৫ জন পরিদর্শক বহিষ্কৃত হয়েছেন এ পরীক্ষায়।
চলতি বছর নিয়মিত-অনিয়মিতসহ এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা আছে মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থীর। নয়টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় বসার কথা ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জনের এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছিলেন।
গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর এটাই প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে, সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ তিন ঘণ্টা সময়ে। চলতি বছর যে শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসেছেন তারা ২০১২ সালে প্রণীত শিক্ষাক্রমেই নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়েছেন।
তাদের পরের ব্যাচ, অর্থাৎ যারা আগামী বছর বা ২০২৬ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসবেন তারা নতুন শিক্ষাক্রমে নবম শ্রেণিতে পড়ছেন।
সরকারের পট পরিবর্তনের জেরে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল হওয়ার পর তারা দশম শ্রেণিতে পড়ছেন ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে। ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে তারা আগামী বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসবেন।
রেওয়াজ ছিল ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার। কোভিড মহামারির কারণে তিন বছর ফেব্রুয়ারিতে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারিতেই শুরু হয়েছিল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হল এপ্রিলে।
এবার এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মে। ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে। ১৩ মে পর্যন্ত দাখিলের তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে। আর ১৪ থেকে ১৮ মের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে।
এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা ১৩ মে ইংরেজি-২ পরীক্ষা দিয়ে শেষ হবে। ১৩ থেকে ২২ মে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ২৩ মে থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত বাস্তব প্রশিক্ষণ চলবে।