এ কর্মসূচি ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আড়াই বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তার একটি সম্প্রসারিত উদ্যোগ।
Published : 21 Jan 2025, 01:14 AM
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবিকার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন একটি প্রকল্প শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি।
সোমবার পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন ৭ কোটি ডলার বাজেটের পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
হোস্ট অ্যান্ড ইমপ্যাক্টেড কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স অ্যাক্টিভিটি শীর্ষক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবে স্থানীয় সংস্থা ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি)।
একটি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে প্রকল্পে যুক্ত থাকবে ডেভওয়ার্কস ইন্টারন্যাশনাল, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, ক্রিশ্চিয়ান এইড ও ইন্টারন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ ফর ইমপ্যাক্ট ইভালুয়েশন।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সংস্থা আনন্দ, আশিকা ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস এবং বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে অংশ নেবে।
এ কর্মসূচি ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তার একটি সম্প্রসারিত উদ্যোগ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলা হয়, এই প্রকল্প জনগণকে চাকরির দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও অর্থনৈতিক সুযোগ প্রদান করবে। এটি নিরাপদ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থায় তাদের প্রবেশ অধিকতর উন্নত করবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে প্রস্তুত করবে।
এর ফলে মানুষের আয় বাড়ার সুযোগ বাড়বে, পানি, নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে, স্থানীয় প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা জোরদার হবে।
প্রকল্পের অধীনে ৬৫ হাজার মানুষ সুপেয় পানির নিশ্চিয়তা পাবে, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ৪৪০টি জলবায়ু সহনশীল কর্মপরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন বলেন, “এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৃহত্তম অর্থায়ন প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম। টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে আমাদের একত্রে কাজ করা ও স্থানীয় দক্ষতাকে কাজে লাগানো গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমরা সরকার, ব্যবসা, নাগরিক সমাজ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে- স্থানীয় জনগণকে একত্রিত করছি এবং তাদের দক্ষতা ও সম্পদ দিয়ে সজ্জিত করছি, যাতে তারা নিজেদের জন্য উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।”
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “কক্সবাজার ও পার্বত্য এলাকার বহুমুখী পণ্য যেমন বাঁশ, বেত, হস্তশিল্প, মধু, ও পাহাড়ি ফল দেশের বাজারে প্রসারে একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ জরুরি। সরকার, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের যৌথ সহযোগিতায় প্রচারণা চালিয়ে স্থানীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বৃদ্ধি করা দরকার।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও ইউএসএআইডির এই যৌথ উদ্যোগ কোনো সম্প্রদায় যেন পিছিয়ে না পড়ে তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে। টেকসই উন্নয়ন, সাম্য ও সামাজিক ঐক্যের জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে একটি ফটো গ্যালারি, কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শনী এবং ডিজিটালি ফিতা কেটে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
এতে ফ্রেন্ডস অব ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশের সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ এবং প্রকল্প প্রধান ট্রিনা বিশপ বক্তব্য রাখেন।