“অর্থনীতিতে কোনো স্থবিরতা আসবে না, সবকিছু সচল থাকবে,” বলে অর্থ উপদেষ্টা।
Published : 27 Mar 2025, 04:21 PM
ঈদুল ফিতর ঘিরে টানা নয় দিনের ছুটি শুরুর আগে শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কাজের চেয়ে বাসায় ফেরার প্রস্তুতিই বেশি দেখা গেছে।
সচিবালয়ের গাড়ির রাখার জায়গাগুলোতে যানবাহন ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম।
অধিকাংশ দপ্তরে কর্মকর্তারা এলেও কিছুক্ষণ বসে পরে উঠে গেছেন। সহকর্মীদের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে সাক্ষাতের জন্য বিভিন্ন কক্ষে গেছেন তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উজ্জল হোসেনের কক্ষে গেলে সেখানকার এক অফিস সহায়ক বলেন, “স্যার সিটে নাই।”
যোগাযোগ করা হলে উজ্জল বলেন, “ছিলাম, কিছুক্ষণ আগে একটা কাজে রুম থেকে বেরিয়েছি।”
‘ছুটির মধ্যেও প্রয়োজনীয় বৈঠক চলবে’
তবে দীর্ঘ ছুটিতেও অর্থনীতির চাকা সচল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রয়োজন হলে ছুটির মধ্যেও তারা বৈঠক করবেন বলে তুলে ধরেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এবার ঈদে দীর্ঘ ছুটি, এতে অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দেবে না তো? এক সাংবাদিকের এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “না, না, অর্থনীতিতে কোনো স্থবিরতা আসবে না। সবকিছু সচল থাকবে। উপদেষ্টা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্য আমরা ঢাকায় থাকব। দরকার হলে বন্ধের মধ্যে আমরা মিটিং করব। এটা আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।
“আর ছুটিতে যদি যাইও দেশে থাকলে তো সমস্যা নেই, বিদেশে গেলে আমরা জুমের মাধ্যমে মিটিং করব। এগুলো কোনো সমস্যা হবে না। কোনো স্থবিরতা তৈরি হবে না।
৩১ মার্চ বা ১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর হবে। সময় চক্রে এবার ২৮ মার্চ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থেকেই ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাচ্ছে। দুদিনের ছুটির পরদিন রোববার নির্বাহী আদেশে ছুটি। ঈদের পরে ১, ২ ও ৩ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকছে। পরের দুই দিন ৪ ও ৫ এপ্রিল সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ছুটি দাঁড়াচ্ছে ৯ দিনে।
তার আগে শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ছুটি মিললে কেউ কেউ টানা ১১ দিনও ছুটি ভোগ করতে পারবেন, কারণ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ছুটি ছিল।
জরুরি সেবায় ৯৯৯
এবারের ঈদে ঢাকায় অবস্থান করা কিংবা বাড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে সবাই নিরাপদেই থাকবেন বলে আশা করছেন স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।
ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিবও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকায় থাকবেন তাদের নিরাপত্তায় কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন, এ প্রশ্নের উত্তরে নাসিমুল গনি বলেন, “যাদের গাড়ি আছে তারা খুব আরামে যাইতে পারবেন। যাতায়াত করতে পারবেন। যারা বাসা বাড়িতে আছেন তারাও ইনশাল্লাহ নিরাপদ থাকবেন।”
কোনো সমস্যা পড়লে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। এই নম্বরে ফোন করে কাজ হয় কী না সেটি তিনি নিজেও পরখ করে দেখার কথা বলেছেন এই সিনিয়র সচিব।
“আপনারা নিজেরা ট্রাই করে দেখতে পারেন, আমি রাত ১টার সময় নিজে চেষ্টা করেছি দেখি কী হয়, তারা সাথে সাথে রেসপন্স করে এবং পুলিশ সাথে সাথে যায়।”
ঈদে মানুষকে স্বস্তি দিতে পুলিশ ঈদের ছুটি ভোগ করেন না তুলে ধরে তিনি বলেন, “পুলিশের ছুটি নেই। তারা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করবেন। বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা থেকে চলে যাবেন, তাদের যাত্রাটা সুবিধাজনক করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ইনশাল্লাহ আমরা আশা করছি অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা ঘটবে না।
“আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক সতর্কতার মধ্যে থাকবে এই সময়টায়। আমরা আশা করি, আল্লাহ আমাদের দেশকে অনেক রকমের বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন, এবারও তার রহমতের চাদরে আমাদের সবাইকে ঢেকে রাখবেন এবং ইনশাল্লাহ আমরা নিরাপদে থাকব।
পুলিশের ছুটি কি বাতিল করা হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, “থানা এমন একটা অফিস যেটা ১৮৬১ সালে শুরু হয়েছিল, দিবারাত্র চলেছে। ২০২৪ সালের আগে এই দেশে আর কোনো দিন থানা বন্ধ হয়নি। এখন আবার চালু হয়েছে। সব থানা চালু থাকবে।”