প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
Published : 30 Jan 2025, 10:22 PM
গাজীপুরের টঙ্গীতে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াতের জন্য সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই ধাপে ছয় দিনের প্রথম পর্বের ইজতেমার বিভিন্ন রুটে এসব ট্রেন নিয়মিত চলবে।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশেষ ট্রেনের পাশাপাশি এক্সপ্রেস, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনে যথাসম্ভব অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হবে।
এসময় সুবর্ণ, সোনারবাংলা, কক্সবাজার, পর্যটক ও বনলতা এক্সপ্রেস ব্যতীত অন্য সব আন্তঃনগর, মেইল এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে (আপ এবং ডাউন) দুই মিনিট করে থামবে।
এছাড়া ইজতেমা চলাকালে জয়দেবপুর কমিউটার ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি শনিবারের পরিবর্তে শুক্রবার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইজতেমা উপলক্ষ্যে টঙ্গী স্টেশনে খোলা হবে অতিরিক্ত বুকিং কাউন্টার এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকিট পরীক্ষক নিয়োজিত থাকবেন।
৩১ জানুয়ারি ইজতেমার প্রথম ধাপে ‘জুমা স্পেশাল’ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে।
জুমা স্পেশাল-১ ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় ছেড়ে টঙ্গী পৌঁছাবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। জুমা স্পেশাল-২ বিকাল ৩টায় টঙ্গী স্টেশন থেকে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে।
ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের দিন (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা-টঙ্গী স্পেশাল নামে মোট চারটি ট্রেন থাকবে।
এর মধ্যে প্রথমটি ভোর ৪টা ৪৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ভোর ৫টায়, তৃতীয়টি ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে এবং শেষ ট্রেনটি ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকা ছাড়বে।
টঙ্গী থেকে পাঁচটি বিশেষ ট্রেনের প্রথমটি সকাল ৮টা ২০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে, তৃতীয়টি সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে, চতুর্থটি বেলা ১০টা ৪০ এবং শেষ ট্রেন বেলা ১১টা ৭ মিনিটে ছাড়বে।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্যায়ে জামালপুর-টঙ্গী রেলপথে চলবে একটি বিশেষ ট্রেন।
এটি ৪ ফেব্রুয়ারি জামালপুর থেকে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে টঙ্গী স্টেশনে পৌঁছাবে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে।
৫ ফেব্রুয়ারি ট্রেনটি ফিরতি পথে টঙ্গী থেকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে জামালপুরে পৌঁছাবে।
সেদিনও ঢাকা-টঙ্গী স্পেশাল নামে থাকবে চারটি বিশেষ ট্রেন। এর মধ্যে প্রথমটি ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে, দ্বিতীয়টি ভোর ৫টায়, তৃতীয়টি ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে এবং শেষটি সকাল ৮টা ২০ মিনিটে টঙ্গীর উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বে।
আর টঙ্গী স্টেশন থেকে ঢাকায় ফিরতে থাকবে পাঁচটি বিশেষ ট্রেন। এর মধ্যে প্রথমটি সকাল ৮টা ২০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি ৮টা ৩৫ মিনিটে, তৃতীয়টি সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে, চতুর্থটি বেলা ১১টা ৭ মিনিটে এবং শেষটি বেলা ১১টা ১৫ ঢাকার উদ্দেশ্যে টঙ্গী ছাড়বে।
এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল রেলপথে বিশেষ ট্রেনটি টঙ্গী থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে বিকাল ২টা ১০ মিনিটে টাঙ্গাইল পৌঁছাবে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, আখেরি মোনাজাতের দিন বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য ২ এবং ৫ ফেব্রুয়ারি ১১, ১২, ৪৫, ৪৬, ৯ ও ১০ নম্বর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এসময় তুরাগ কমিউটার ১ ও ২ চলাচলও বন্ধ থাকবে। ৭৫/৭৬ ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস এবং ২৬১, ২৬২, ২৬৩ ও ২৬৪ নম্বর লোকাল ট্রেন ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি বন্ধ থাকবে।
ড্রোন ও ফায়ারফাইটার নিয়ে প্রস্তুত ফায়ার সার্ভিস
ইজতেমা ময়দানে অগ্নিনিরাপত্তা ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুরো ইজতেমা ময়দান অগ্নিনিরাপত্তা দিতে ৩৭৪ জনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক অগ্নি দুর্ঘটনা মোকাবিলায় প্রতিটি খিত্তায় ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার’, ‘ফায়ার হুক’, ‘ফায়ার বিটার’সহ দুইজন করে ‘ফায়ারফাইটার’ সবসময় দায়িত্ব পালন করবেন।
ফায়ার সার্ভিস বলেছে, অগ্নিনিরাপত্তা ও ইজতেমা ময়দান পর্যবেক্ষণে ২টি অগ্নিনির্বাপন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া সার্বক্ষণিক সেবা দিতে দুটি অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে ফায়ার সার্ভিস। সেখানে ০১৯০১০২০৮৬৫ এবং ০২২২৪৪১০০৮২ নম্বরে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া হবে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এছাড়া অগ্নিনিরাপত্তায় ময়দানের বিভিন্ন স্থানে চারটি পানিবাহী গাড়ি, তিনটি অ্যাম্বুলেন্স, ১৪টি পাম্প, ২২০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ১৩টি জেনারেটর, ১২৮টি ওয়াকিটকি, ১৫০টি ডেলিভারি হোস ও ১৪টি ব্রাঞ্চ পাইপ প্রস্তুত করেছে সরকারি এ সেবা প্রতিষ্ঠান।
নৌ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তুরাগ নদীতে (কামারপাড়া ব্রিজের নিচে) উদ্ধারকারী স্পিড বোট এবং চারজনের ডুবুরি দল এবং অগ্নিনির্বাপনে দ্রুত পানি প্রদানে তুরাগ তীরে ৬টি ও অন্য রিজার্ভারে ৫টি পাম্প স্থাপন করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এছাড়া টঙ্গী, উত্তরা ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো ইজতেমার সময় স্ট্যান্ডবাই রাখার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
দু’ভাগেই হচ্ছে ইজতেমা
মাওলানা জোবায়ের এবং মাওলানা সাদের মধ্যে বিভেদের কারণে গত কয়েক বছরের মত এবারও তাবলীগ জামাতের বার্ষিক এ সম্মেলন হচ্ছে দুই পর্বে।
এর মধ্যে শুক্রবার থেকে জোবায়েরের অনুসারীদের অংশগ্রহণে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এই পর্বটিও অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই ধাপে।
প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
আর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
আরও পড়ুন
ইজতেমা ঘিরে যে পথে চলবে যানবাহন
বিশ্ব ইজতেমা: শুরুর আগেই পরিপূর্ণ তুরাগ তীরের ময়দান
নিরাপত্তার স্বার্থেই ইজতেমার ২ পর্বের মধ্যে সময় বাড়ানো হয়েছে: আইজিপি