ইজতেমার সময়টিতে নির্দেশনা মেনে চলতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ।
Published : 28 Jan 2025, 08:22 PM
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে যানবাহন চলাচলে ১৩ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি।
সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা তুলে ধরে ইজতেমার সময়টিতে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা হবে। আখেরি মোনাজাত হবে ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে যানবাহনগুলোকে যেসব নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে তা হল-
>> আখেরি মোনাজাতের দিন (২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কভার্ডভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউর ব্রিজ মোড় এড়িয়ে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।
>> একইভাবে নবীনগর, বাইপাইল ও আশুলিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহন কামারপাড়া/আব্দুল্লাহপুর ক্রসিং এড়িয়ে সাভার, গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে অথবা ধউড় ব্রিজ ক্রসিং হয়ে মিরপুর বেড়ীবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।
>> ঢাকা থেকে এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে আসা যানবাহন কুড়িল ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে প্রগতি সরণি হয়ে অথবা বিশ্বরোড ক্রসিং (নিকুঞ্জ-১ গেট) দিয়ে ইউটার্ন করে চলাচল করবে।
>> আখেরি মোনাজাতের দিন (২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে ৩০০ ফিট দিয়ে আসা যানবাহন কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-২ (এয়ারপোর্টগামী) এড়িয়ে প্রগতি সরণি এবং কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-৪ (কাকলী-মহাখালীগামী) ব্যবহার করবে। কোনোভাবেই বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার করা যাবে না।
>> ওই দুইদিন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা/এয়ারপোর্টগামী এক্সিট এড়িয়ে চলতে অনুরোধ রয়েছে।
>> উত্তরার বাসিন্দা, বিমানযাত্রী, বিমান অপারেশনাল যানবাহন ও বিমান ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সকল যানবাহনের চালক বিমানবন্দর সড়ক এড়িয়ে বিকল্প হিসেবে মহাখালী বিজয় সরণি হয়ে মিরপুর-গাবতলী সড়ক ব্যবহার করবেন।
>> ঢাকা মহানগর থেকে যারা পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে যাবেন, তাদের তুরাগ নদীর উপরে নির্মিত পল্টুন ব্রিজ অথবা কামাড়পাড়া ব্রিজ দিয়ে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যাতায়াত করবেন।
>> বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন পদ্মা ইউলুপ, কুড়াতলী লুপ-২ এবং নিকুঞ্জ-১ গেট থেকে ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের জন্য পরিবহন সেবা প্রদান করা হবে।
>> নির্ধারিত পার্কিং স্থানে যানবাহন পার্কিংয়ে সময় অবশ্যই গাড়ির চালক/হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং বহনকারী যাত্রীরা ও চালক একে-অপরের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখবেন, যাতে বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে পারস্পরিক যোগাযোগ করা যায়।
>> ইজতেমায় আগতদের বহনকারী প্রতিটি যানবাহনের দৃশ্যমান স্থানে চালকের নাম এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে রাখতে হবে।
>> ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ফ্লাইওভারের নিচে আব্দুল্লাহপুর বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সকল যানবাহন চালককে আজমপুর থেকে ফ্লাইওভার ব্যবহার করার অনুরোধ।
>> সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে জনগণ পায়ে হেঁটে ফ্লাইওভার দিয়ে পারাপার না হওয়ার অনুরোধ।
>> খিলক্ষেত থেকে আব্দুল্লাপুর হয়ে ধউড় ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে পার্কিং করা যাবে না।
গাড়ি পার্কিং
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের পার্কিং: ১৫ নম্বর সেক্টর এলাকার কদমতলী মার্কেট, ৫ নম্বর ব্রিজের ঢাল এবং ১৭ নম্বর সেক্টর উলুদাহ মাঠ।
সিলেট ও খুলনা বিভাগের পার্কিং: উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টর লেকপাড় মাঠ।
রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের পার্কিং: ১০ নম্বর ব্রিজ এবং ১১নম্বর ব্রিজ লেকের পশ্চিম পাশে, ১৬ নম্বর সেক্টরের ভিতরে ও বউবাজার মাঠ।
বরিশাল বিভাগের পার্কিং: ধউর ব্রিজ ক্রসিং সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশন।
ঢাকা মহানগরীর জন্য পার্কিং: ৩০০ ফিট রাস্তা সংলগ্ন স্বদেশ প্রোপার্টির খালি জায়গা।
‘ডাইভারশন’
শুধু আখেরি মোনাজাতের দিন অর্থাৎ আগামী ২ ও ৫ ফ্রেব্রুয়ারি ভোর ৪টা থেকে ধউর ব্রিজ, ১৮ নম্বর সেক্টর পঞ্চবটী ক্রসিং, পদ্মা ইউলুপ, ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড়, মহাখালী ক্রসিং, হোটেল রেডিসন ব্লু ক্রসিং, ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে (বিশ্বরোড নিকুঞ্জ-১ গেট), কুড়াতলী ফ্লাইওভার লুপ-২, মহাখালী ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে ও মিরপুর দিয়াবাড়ী বাসস্ট্যান্ড ক্রসিংয়ে ডাইভারশন দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।
কোন পর্বে কারা
বিশ্ব ইজতেমার এই দুই পর্বের তারিখ নির্ধারণ করেছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা। আর দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থিদের ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তাদের অনুমতি না দেওয়ার জোর দাবি জানিয়ে আসছেন জুবায়েরপন্থিরা।
তাবলীগ জামাতের এ অংশের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, ৩১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ধাপের ইজতেমায় অংশ নেবেন ঢাকার একাংশসহ ৪১ জেলার মানুষ।
এলাকাগুলো হল– গাজীপুর, গাইবান্ধা, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারি, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোণা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী এবং ঢাকার একাংশ।
এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একাংশসহ ২২ জেলার মুসলমানরা ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন।
এলাকাগুলো হল– যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মাদপুর, মুন্সিগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, নওগাঁ, বান্দরবন ও ঢাকার একাংশ।
বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের প্রধান মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাদের ইজতেমার তারিখ রাখা হয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা প্রচার চালাচ্ছে সাদপন্থিদের ইজতেমা হবে না।”