Published : 06 May 2025, 12:43 AM
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ ধর্ম ও নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি।
কমিশনের সদস্যদের মধ্যে সমাজের সব অংশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি বলেও পর্যবেক্ষণে তুলে ধরেছে নতুন রাজনৈতিক দলটি।
সোমবার কমিশনের প্রতিবেদন মূল্যায়ন করতে গিয়ে এনসিপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানিয়ে এবং সব নাগরিকের বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নীতি প্রণয়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
“নারী কমিশনের কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি করে সমাজ বনাম রাষ্ট্র এবং ধর্ম ও নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।”
দলটি বলছে, “সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মধ্যে সমাজের সব অংশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়েছে বলে এনসিপি মনে করে না। আমরা লক্ষ্য করছি, এই কমিশনের প্রস্তাব ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন মাত্রার আলোচনা ও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।”
তবে নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার সমালোচনা করতে গিয়ে দেশের কিছু গোষ্ঠী নারীর প্রতি অবমাননা করেছে বলেও মনে করে এনসিপি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রস্তাবনার সমালোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমাবেশ থেকে নারীদের প্রতি প্রকাশ্যে যে শ্লেষাত্মক ও অমর্যাদাকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এনসিপি।
“বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে তো বটেই, বিশেষত জুলাই-অগাস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সব শ্রেণি, পেশা, ধর্ম, বর্ণের নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের ফলে ১৫ বছরের জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদ থেকে জাতির মুক্তি ঘটেছে। এ ইতিহাসকে আমরা ভুলব না।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এনসিপি নারীর স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও সামাজিক সংগ্রামকে গভীরভাবে উপলব্ধি করে এবং নারীর মর্যাদা ও অধিকার বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জাতীয় নাগরিক পার্টি নারীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ।”
গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করে।
গত বছর ১৮ নভেম্বর গঠিত হয় ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’। গত ১৯ এপ্রিল তারা প্রধান উপদেষ্টার হাতে প্রতিবেদন তুলে দেয়।