আশ্রয়ণের ঘরগুলো দুর্যোগ সহনীয় হওয়ায় কোনো ঘরের তেমন ক্ষতির সংবাদ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
Published : 25 Oct 2022, 11:53 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুর্যোগ সহনীয় ঘর পাওয়া উপকূলীয় ১৯ জেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে ‘আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়নি’।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে ১৯ উপকূলীয় জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৯০ জন মানুষ এবং ৪৫ হাজার ৪৪২টি গবাদি পশু আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। মোট ৭ হাজার ৪৯০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪২ লাখ ৭৪ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা ছিল।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, গত দুই বছরে উপকূলীয় ১৯ জেলায় ৬১ হাজার ৩৭৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুর্যোগ সহনীয় ঘর দেওয়া হয়। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় এসব ঘর পাওয়া প্রায় ৪ লাখ মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।”
আশ্রয়ণের ঘরগুলো দুর্যোগ সহনীয় হওয়ায় কোনো ঘরের তেমন ক্ষতির সংবাদ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাওয়ায় তাদের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে। দুর্যোগের সময় মানুষ, গবাদী পশু ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
আশ্রায়ণের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে তৃতীয় ধাপের ঘরগুলো অনেক বেশি টেকসই। তৃতীয় ধাপে একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। এ ধাপে আরসিসি পিলার, গ্রেড বিমসহ বেশ কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়।
উপকূলীয় ১৯ জেলায় মোট ৬১ হাজার ৩৭৮টি ঘরের মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৮০৫, শরীয়তপুরে ২ হাজার ৬৬২, কক্সবাজারে ৩ হাজার ৬৪০, চট্টগ্রাম জেলায় ৫ হাজার ০৪৩, চাঁদপুরে ৪০৮, লক্ষ্মীপুরে ৩ হাজার ২২৮, নোয়াখালীতে ৩ হাজার ৬২৮, ফেনীতে ১ হাজার ৬৫৯, সাতক্ষীরায় ২ হাজার ৯০৬, যশোরে ২ হাজার ১৫৩, খুলনায় ৩ হাজার ৯৫০, নড়াইলে ৮২৯, বাগেরহাটে ২ হাজার ৭৯৪, ভোলায় ৩ হাজার ৫২৯, পিরোজপুরে ৪ হাজার ৮৬৭, ঝালকাঠিতে ১ হাজার ৮৪২, পটুয়াখালীতে ৬ হাজার ৯৪১, বরগুনায় ২ হাজার ৬০০ এবং বরিশাল জেলায় ৪ হাজার ৮৩৪ পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘আশ্রায়ণ’ প্রকল্প গ্রহণ করেন তৎকালীন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।
আশ্রায়ণ এবং আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭ হাজার ২৪৪ ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আশ্রায়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মধ্যে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া ও ভাসমান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীও রয়েছে।