সাংবাদিক অমিত হাবিবের জীবনাবসান

বার্তা সম্পাদক হিসেবে মুন্সীয়ানার জন্য গণমাধ্যম জগতে খ্যাতি ছিল তার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2022, 06:00 PM
Updated : 28 July 2022, 06:00 PM

দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিব আর নেই।

এক সপ্তাহ আগে কর্মস্থলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে লাইফ সাপোর্টে চলে গিয়েছিলেন তিনি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে সেই অবস্থায়ই না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।

অমিত হাবিবের ছোট ভাই ফয়জুল হাবিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সোয়া ১১ টায় চিকিৎসকরা তার ভাইয়ের মৃত্যু ঘোষণা করেন।

অমিত হাবিবের বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিন দশকের কর্মজীবনে সম্পাদক হলেও বার্তা সম্পাদক হিসেবে দক্ষতার জন্য গণমাধ্যম জগতে খ্যাতি ছিল তার। বার্তা কক্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দক্ষতার কথাও সহকর্মীদের মুখে মুখে ফেরে।

ফয়জুল হাবিব জানান, ২১ জুলাই বিকালে কর্মস্থলে অমিত হাবিব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে সন্ধ্যায় তাকে বিআরবি হাসপাতালে নিয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নিয়ে রাখা হয়। ২৫ জুলাই তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ১০ বাংলামোটরে দেশ রূপান্তর কার্যালয়ে অমিত হাবিবের জানাজা হবে। এরপর লাশ নেওয়া হবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সকাল সাড়ে ১১টায় সেখানে জানাজা শেষে যশোরে নেওয়া হবে মরদেহ।

Also Read: সাংবাদিক অমিত হাবিবের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

অমিত হাবিবের জন্ম ১৯৬৪ সালের অক্টোবরে যশোরে। যশোর এমএম কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন তিনি।

এর পরপরই তিনি লেখালেখিতে যুক্ত হন। সেসময় বিচিন্তা, পূর্বাভাস, প্রিয় প্রজন্ম পত্রিকায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত নাটক, অনুষ্ঠানের সমালোচনা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী লেখা লিখে বেশ জনপ্রিয়তা পান।

১৯৮৭ সালে দৈনিক খবরে সহ সম্পাদক হিসাবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন অমিত হাবিব। ১৯৯১ সালে দৈনিক আজকের কাগজের নতুন যাত্রায় সঙ্গী হন তিনি।

পরে তিনি আজকের কাগজ থেকে ভোরের কাগজে যান যুগ্ম বার্তা সম্পাদক হিসাবে। পরে এই পত্রিকায় বার্তা সম্পাদক হন তিনি।

২০০৩ সালে যায়যায়দিনে প্রধান বার্তা সম্পাদক পদে যোগ দিয়ে নতুন এই দৈনিকের কর্মী গোছানোর কাজে হাত দেন তিনি। প্রায় তিন বছর পর ২০০৬ সালে যায়যায়দিন প্রকাশিত হয়, এর মূল কাজটি তাকেই করতে হত।

২০০৭ সালে তিনি চীনের আন্তর্জাতিক বেতারে বিদেশি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগ দেন। সেখানে এক বছর কাজ করার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং দৈনিক সমকালে প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।

২০০৯ সালে নতুন দৈনিক কালের কণ্ঠে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। পরে এই পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্বও পান তিনি। ২০১৮ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দেশ রূপান্তর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও সাংবাদিকতা পেশায় জড়িয়ে পড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা তার শেষ হয়নি। সংসার জীবন শুরু করলেও তা স্থায়ী হয়নি। তার কোনো সন্তান নেই।