“আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে,” বলেন তিনি।
Published : 03 May 2023, 11:36 AM
‘স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি ও অগ্নি সন্ত্রাসীরা’ যাতে আর কখনো ক্ষমতায় ফিরতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
বাসস জানায়, মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসির রিজ কার্লটন হোটেলের হলরুমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর কখনো ক্ষমতায় ফিরতে না পারে, তা নিশ্চিত করুন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত “তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।”
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারো উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।”
বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে– সেই প্রত্যয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।”
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে দেশে বিদেশে ‘রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্য’ বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামায়াত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
এসব অপপ্রচারে কান না দিতে দেশবাসী ও প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। সবাইকে মাথা উঁচু করে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলতে হবে।”
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা এটা করতে পেরেছি।“
আওয়ামী লীগকে একটি ‘গণমুখী দল’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ দল গঠিত হয়েছে।… আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দল যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
“আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছি এবং একে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।”
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে সরকারপ্রধান তাদের হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ মাধ্যমে রেমিটেন্স দেশের পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেমিটেন্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।
কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরও সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ সংকটে পড়লেও বাংলাদেশের অবস্থা বহু দেশের তুলনায় ‘এখনও ভালো’।
দেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আর চরম দারিদ্র্য থাকবে না।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সারাদেশে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বাড়ি দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৩৫ লাখ লোককে বাড়ি দেওয়া হয়েছে এবং তাদের জীবিকা নিশ্চিত করা হয়েছে।
“দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, কারণ সরকার প্রতিটি গৃহহীন লোককে বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।