এ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ’কর ফাঁকিসহ আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ’ থাকার কথা তুলে ধরে অনুসন্ধানে নেমেছে এনবিআরও।
Published : 04 Oct 2024, 01:48 AM
বিপুল জমি দখল ও অর্থপাচারের অভিযোগে সিআইডি তদন্তে নামায় বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের ‘ব্যবসায়িক সুনাম’ নষ্ট হওয়ার দাবি করেছে; যা থেকে উত্তরণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সহায়তা চেয়েছে আবাসন ব্যবসা থেকে শিল্প গোষ্ঠীতে পরিণত হওয়া কোম্পানিটি ।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ দেশে-বিদেশে তাদের বিরুদ্ধে চলমান ‘মানহানিকর বিবৃতি ও প্রপাগান্ডার’ প্রচার বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছে।
দেশের সবচেয়ে বড় আবাসন কোম্পানি বসুন্ধরা গ্রুপের কর্ণধার আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ছেলে সায়েম সোবহান আনভীরসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল এবং অর্থপাচারের অভিযোগ পাওয়ার কথা তুলে ধরে গত ৫ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানে নামার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সিআইডি।
এর আগে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধাভোগী কোম্পানি হিসেবে পরিচিত ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ’কর ফাঁকিসহ আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ’ থাকার কথা তুলে ধরে অনুসন্ধান শুরু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।
এ সংস্থার সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) ২২ অগাস্ট আরও কয়েকটি বড় শিল্পগ্রুপের সঙ্গে বসুন্ধরার বিষয়েও “বিভিন্ন পন্থায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির’ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
আর বসুন্ধরার মালিকানা হস্তান্তর স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরকে চিঠি দেওয়ার কথা ২ অক্টোবর জানায় এনবিআর।
অপরদিকে সিআইসির পর সিআইডি বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘প্রতারণা, জাল জালিয়াতি, শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকি, আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের’ অভিযোগ পাওয়ার কথা জানায়।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছে, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের প্রস্তাবিত জমির কিছু অংশ রাজউকের অনুমোদন থাকলেও বেশিরভাগই রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই করা হয়।
”ক্ষমতা ও অর্থের বলে জনসাধারণের ও সরকারি খাল, বিল, নদী, খাসজমি, পতিত ভূমি, কবরস্থান, বধ্যভূমি ভরাট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।”
সিআইডির এসব বিষয়ে নিয়ে অনুসন্ধানে নামার ঘোষণার পর বিভিন্ন সময় জোর করে জমি দখলসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ থাকা এ কোম্পানি ‘সুনামহানির মুখে’ পড়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়।
বুধবার গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায়, সুনাম এবং চলমান ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু রাখতে বসুন্ধরা গ্রুপ এবং এর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ‘মানহানিকর বিবৃতি ও প্রপাগান্ডা’ প্রচার বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ চিঠির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কোনো ভাষ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি। তবে চিঠিটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা হয়েছে বলে জানা গেছে এবং প্রতিবেদক কপিটি দেখেছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত ছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। সরকার পতনের পর সামনে আসছে তাদের জমি দখল ও অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য। কলেজ ছাত্রী মোশারাত জাহান মুনিয়া হত্যাকাণ্ড থেকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের অব্যাহতির বিষয়টি নিয়েও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ২২ জুলাই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, “বিএনপি-জামাতের আগের ঘটনার বিচার হলে- আজকে তারা সাহস পেত না। সবাই জানে- কারা কারা এর সাথে জড়িত।
“আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে; আপনারা চিন্তা করেন- ১৪ বছর আগে আপনারা কোথায় ছিলেন, এখন কোথায় এসেছেন। ৭ দিন ব্যবসা বন্ধ থাকলে কিছু হবে না। এই সন্ত্রাসী জঙ্গিবাহিনীকে ধ্বংস করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
সেদিন শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, “উনি আমাদের নেতৃত্বে দেবেন, ইনশাল্লাহ কোনো শক্তি আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। নেতৃত্বের প্রতি আমাদের আস্থা-বিশ্বাস আছে, মৃত্যুর পরও আস্থা-বিশ্বাস থাকবে।”
সরকার পতনের পর গত ২১ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে কলেজছাত্রী মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
তিনি ওই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে আহমদ আকবর সোবহানের ছেলে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান।
তানিয়া বলেছিলেন, “আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার প্রশ্রয় না পেলে- আনভীররা এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পেতো না। পিবিআইতে যখন আমার মামলাটি গেল, সেখানেও অর্থ ঢেলে- তৎকালীন পিবিআই প্রধান বনজ কুমারকে ঘুষ দিয়ে তাদের থেকেও একটি একপেশে তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আসে বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই রিপোর্টেও আনভীরসহ সকলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমি নারাজি জানানোর পর সেটাও আদালতে খারিজ হয়ে যায়।"
ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে ২০২১ সালে ২৬ এপ্রিল রাতে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকে। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।
সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন।
সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। তবে তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে মুনিয়ার ‘আত্মহত্যায়’ আনভীরের ‘সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি’ জানিয়ে ২০২১ সালের ১৯ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
পুলিশের ওই প্রতিবেদনে অনাস্থা (নারাজি) জানিয়ে মুনিয়ার বোন অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করলেও তা খারিজ করা হয়। পরে পিবিআই তদন্ত করলেও ১৩ মাসের মাথায় ২০২২ সালের আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে আনভীর ও আহমদ সোবহানও মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
ক্ষমতার পালাবদলের পর আগের সরকারের ১৫ বছরের শাসনকালে সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি আর্থিক খাত এবং বড় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে তৎপর হয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন।
এরই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে এনবিআর ও সিআইডি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গ্রুপটির বিভিন্ন অনিয়মের খবরও প্রকাশ হতে থাকে।
সিআইডি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান তানভীরকে ‘স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক’ দাবি করে বলেছে, “এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে দেশে একটি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রায়ই স্বর্ণের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলার তথ্য পাওয়া যায়।”
এমন প্রেক্ষাপটে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসায়িক ক্ষতি বন্ধে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চাইলেন আহমেদ আকবর সোবহান।
চিঠিতে বসুন্ধরা গ্রুপকে বাংলাদেশের বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বিশ্বখ্যাত কনগ্লোমারেট দাবি করে লিখেছেন, গ্রুপটি আবাসন, তেল ও গ্যাস, বিটুমিন, কাগজ, সিমেন্ট, শিপিং ইন্ডাস্ট্রি, ভোক্তা পণ্য, কয়লা আমদানিসহ বহু খাত ও শিল্পে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
”গ্রুপটি গোল্ড রিফাইনারি, কেমিক্যাল, স্টিল এবং সিড ক্রাশিং প্ল্যান্টের কার্যক্রম কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায় আছে। তাদের বেশ কয়েকটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে।”
সেখানে দাবি করা হয়, বিগত ৪০ বছরে বসুন্ধরা গ্রুপ ‘সবসময় দেশের নিয়ম ও বিধি মেনে চলেছে‘, ‘ঋণ খেলাপি বা জনসাধারণের অর্থ আত্মসাতের’ কোনো ঘটনা ঘটায়নি।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সিআইডির তদন্ত শুরুর তথ্য তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, ''এতে বসুন্ধরা গ্রুপ, এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ভূমি দখল, অর্থপাচার এবং চোরাচালানের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যদিও এর কোনো বৈধ ভিত্তি নেই। কোনো তদন্ত ছাড়াই বা আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এই ধরনের অস্পষ্ট অভিযোগ প্রচার করা হয়েছে, যা গ্রুপটির সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে হাজার হাজার কর্মী ও তাদের পরিবারের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের জীবনযাত্রা সরাসরি বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে জড়িত।''
সিআইডি এবং পরবর্তী সংবাদ প্রতিবেদনের ভাষ্য নিয়ে বসুন্ধরার চিঠিতে বলা হয়, ''বসুন্ধরা গ্রুপ বেআইনিভাবে ১,০১৬ একর জমি দখল করেছে, যার মধ্যে ৮০০ একর সরকারি জমি এবং ২১৬ একর ভাওয়াল রাজ এস্টেটের জমি অন্তর্ভুক্ত। শুধু আবাসন প্রকল্পের অংশগুলোরই রাজউকের অনুমোদন রয়েছে এবং বেশির ভাগ জমি ব্যক্তিগত ও সরকারি জমিতে বেআইনিভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে বলে তুলে ধরা হয়।
”তবে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগের বৈধতা নির্ধারণের একমাত্র এখতিয়ার আদালতের ওপর নির্ভরশীল। এখন পর্যন্ত কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষ বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগে কোনো রায় দেননি।
''বসুন্ধরা গ্রুপ ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ তদন্ত এবং নির্ভরযোগ্য প্রমাণ ছাড়া করা উচিত নয়। এই ভিত্তিহীন অভিযোগগুলো কোনো তদন্ত ছাড়াই সিআইডি এবং যাচাই-বাছাই না করেই মিডিয়ায় ছাপা হয়েছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালা লঙ্ঘন।”
চিঠিতে দাবি করা হয়, ''বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও কখনো বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করেনি। বরং বসুন্ধরা গ্রুপ বরাবরই ঋণ পরিশোধে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য দেখিয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এ চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আহমেদ আকবর সোবহানের বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব চিঠি পাঠানোর বিষয়ে অবহিতি থাকলেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, চিঠির বিষয়বস্তু সর্ম্পকে তিনি জানেন না।
বসুন্ধরা গ্রুপের আইনজীবী ব্যারিস্টার সুহান খান বলেন, ‘‘তদন্তের পূর্বেই সিআইডি প্রেস রিলিজ আকারে দিয়েছে। সেটি ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর ফলে দেশে বিদেশে তাদের যে ব্যবসা রয়েছে তাতে সেসব ব্যবসা পরিচালনায় তারা বেশ অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন।
”গ্রুপটির বিষয়ে কোনো তদন্ত শুরুর আগে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে একটা সাজা দিয়ে দেওয়া হল। সেই সাজাটা হল সুনামহানি। এই বিষয়টি আমাদের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টার সুনজরে এনেছেন।
”চিঠিতে তিনি বলেছেন, অতীতের এবং ভবিষ্যতে গ্রুপটির বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটির বিষয়ের তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করবে কিন্তু এরকম ‘প্রিম্যাচুয়িউর‘অভিযোগের বিষয়ে মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে মিডিয়া ট্রায়ালের মধ্যে ফেলে সম্মানহানি না করা হয় সেই বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন আমাদের চেয়ারম্যান।”
এ গ্রুপের সঙ্গে লাখো মানুষের জীবিকা জড়িত থাকার কথা তুলে ধরে এই আইনজীবী বলেন, “তাদেরকে যাতে বিচারের আগেই দোষী সাব্যস্ত করা না হয় সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।”
পুরনো খবর
'দেড় লাখ কোটি টাকার জমি দখল, অর্থপাচার': বসুন্ধরার বিরুদ্ধে অনুসন
বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, সামিট, ওরিয়ন ও নাসা গ্রুপের মালিকদের বিষয়ে
বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, এস আলমসহ ৭ কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর স্থগিত