‘রাজনৈতিক সমঝোতা বা রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে’ সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন নাহিদ।
Published : 23 Oct 2024, 05:02 PM
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদে থাকা বা না থাকার বিষয়টি ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি কোনো ‘সাংবিধানিক প্রশ্ন হতে পারে না’।
নাহিদ বলেন, “রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না-এ প্রশ্নটি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়, এটি একেবারেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সেই সময় বিদ্যমান রাষ্ট্রপতি রেখেই সরকার গঠন করেছিলাম। যদি এই মনে হয় এ সেটআপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, অথবা এ সেট আপে জনগণ অসন্তুষ্ট; তাহলে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবব এবং পুনর্মূল্যায়ন আমরা করছি।”
ফলে ‘রাজনৈতিক সমঝোতা বা রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে’ সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনাকে উৎখাতে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি সংগঠন রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে। মঙ্গলবার বঙ্গভবনের সামনে গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে বিক্ষোভ এবং হাঙ্গামা।
তবে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ‘সিদ্ধান্ত হয়নি’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি ঘিরে দেশে ‘নতুন কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট’ যেন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, “বিভিন্ন অংশীজনের সাথে আলোচনা করছি এবং আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত আসবে। এটা রাজনৈতিক আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলায়। এটি এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি।”
এ সময় সবাইকে ‘শান্ত এবং ঐক্যবদ্ধ’ থাকার আহ্বান জানান তথ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান রাখছি, এ মুহূর্তে আমরা সচেতন থাকি এবং শান্ত থাকি। কোনো ধরনের সুবিধাভোগী গোষ্ঠী বা দেশি-বিদেশি নানা ধরনের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র চলছে; আমরা যাতে এমন কোনো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, যাতে তারা সুবিধা নিতে পারে। সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বঙ্গভবন বা অন্য কোথাও ‘আন্দোলনের প্রয়োজন নেই’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তুমুল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আড়াই মাস পর বিতর্ক তৈরি হয় রাষ্ট্রপতির একটি কথায়।
দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা শুনেছেন, কিন্তু কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই।
ওই বক্তব্য মানবজমিনের একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি চাপে পড়েন। প্রথমে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাহাবুদ্দিন ‘মিথ্যা’ বলে শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাকে অপসারণের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে মাঠে নামে।
পুরনো খবর
নতুন কোনো সাংবিধানিক সংকট যেন না হয়: বিএনপি
রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি: প্রেস সচিব
বঙ্গভবন এলাকা থমথমে, নিরাপত্তা বাড়াতে কাঁটাতারের বেড়া
অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির অপসরণ দাবি সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি: বঙ্গভবনের সামনে গভীর রাতেও বিক্ষোভ
'অসত্য' বক্তব্যে রাষ্ট্রপতির 'বিশেষ উদ্দেশ্য': বিএনপির জয়নুল