৫ বছরের শিশুদের বিনা ভাড়ায় চলাচলের সুযোগ দেওয়ার দাবিও জানায় আইপিডি।
Published : 26 Dec 2022, 07:27 PM
মেট্রোরেলে পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রী নিশ্চিত করতে বর্তমান নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৩০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।
সোমবার ‘রাজধানীর টেকসই পরিকল্পনায় মেট্রোরেল: প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এ দাবি জানানো হয়।
আইপিডির পক্ষ থেকে একই সঙ্গে মেট্রোরেলকে সাধারণ জনগণের পরিবহন হিসেবে গড়ে তুলতে ৩০ শতাংশ কমানোর পর সেই ভাড়া থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও ন্যূনতম আয় শ্রেণির জনগণ এবং ছাত্রদের ভাড়া ৫০ ভাগ কমিয়ে নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে আলোচনা সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে ৫ বছর পর্যন্ত শিশুদের বিনা ভাড়ায় চলাচলের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে।
সভায় বক্তারা মেট্রো স্টেশনের আশেপাশে পথচারী চলাচল, বাসসহ কমিউনিটিভিত্তিক সার্ভিস, অটোরিকশা-রিকশা-ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কীভাবে মেট্রো স্টেশনে আসবে বা স্টেশন হতে বিভিন্ন গন্তব্যে যাবে তা নিয়েও কার্যকর পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছেন।
আর একদিন পরই ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেল উদ্বোধন হচ্ছে। প্রথম দফায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে চলবে ট্রেন। বুধবার তা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরদিন বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে মেট্রোরেলে। প্রথম দিকে সীমিত পর্যায়ে চলবে মেট্রোরেল। আপাতত সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চলবে এবং উত্তরা থেকে আগারগাঁও আসতে অন্য কোনো স্টেশনে কোথাও থামবে না ট্রেন। পরে যাত্রীদের সাড়ার উপর ভিত্তি করে সময়সূচি বাড়ানো বা কমানো হবে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা ধরে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণ করার কথা আগেই জানিয়েছে। এ হিসাবে কিলোমিটারে ভাড়া রাখা হয় পাঁচ টাকা।
আলোচনায় আইপিডির নির্বাহী পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের পাশাপাশি মেট্রোরেল ভূমি ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে।
“স্টেশনের আশেপাশের এলাকার ভূমি ব্যবহারের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে, যার আলামত ইতিমধ্যেই উত্তরা থেকে আগারগাঁও এলাকায় চোখে পড়ছে। নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সঠিক নীতি কৌশল প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও যথাযথ উন্নয়ন নজরাদারি প্রয়োজন, যাতে মেট্রোরেলের সুফল সকল শ্রেণির মানুষ পায়।”
ইনস্টিটিউট উপদেষ্টা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, মেট্রোরেল ঢাকাবাসীকে সুশৃংখল গণপরিবহনের নতুন স্বাদ এনে দেবে।
“মেট্রোরেলের আশেপাশের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ছোট ছোট প্লট একত্রীকরণ বা ল্যান্ড কনসোলিডেশন করবার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। মেট্রোরেল চালু হলে যত্রতত্র পোস্টার লাগানো বন্ধ করা, স্টেশন অপরিচ্ছন্ন করা এবং যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না।”
রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার শহরের অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে মেট্রো ব্যবস্থা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। তবে মেট্রোরেলকে কার্যকর করতে মেট্রোর পাশাপাশি সমন্বিত উপায়ে বাস সার্ভিস চালু করা এবং স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত পদচারী সুবিধা ও গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা প্রয়োজন।
“পাশাপাশি ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ করতে ঢাকার সাথে কাছাকাছি দূরত্বের আঞ্চলিক শহরগুলোর দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। টিওডি ডেভেলপমেন্ট ও স্টেশন প্লাজার কার্যকর উন্নয়ন ও ব্যবহার নিশ্চিত করে মেট্রোরেলের ব্যয় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।”
আলোচনায় আইপিডির পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) প্রকল্পের পরামর্শক ড. আফসানা হক, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ডেপুটি আরবান প্ল্যানার মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এটিএম শাহজাহান, উত্তরা ও মিরপুর এলাকার কয়েকজন নাগরিক এতে অংশ নেন।
মেট্রোরেলে নারীদের জন্য আলাদা কোচ