মেট্রোরেলে নারীদের জন্য আলাদা কোচ

স্টেশনে থাকছে নারীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা, যেখানে শিশুদের ডায়াপারও পরিবর্তন করা যাবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2022, 09:22 AM
Updated : 26 Dec 2022, 09:22 AM

দেশের প্রথম মেট্রোরেলে নারীদের নির্বিঘ্ন চলাচলে প্রতিটি ট্রেনে থাকছে আলাদা কোচ, তবে চাইলে তারা অন্য কোচেও যাতায়াত করতে পারবেন।

এ ট্রেনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে গত ১২ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে আসেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।

তিনি জানান, শুরুতে ছয় বগির ১০টি ট্রেন প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ব্যাকআপ হিসাবে থাকছে আরও দুটি ট্রেন।

এসব ট্রেনের একটি কোচ কেবল নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে উল্লেখ করে ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, এই কোচের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৩৯০ জন। চাইলে বাকি পাঁচ বগিতেও নারীরা উঠতে পারবেন।

স্টেশনগুলোতে নারীদের জন্য থাকছে পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা। সেখানে শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তনের বিশেষ ব্যবস্থাও থাকছে। আর গর্ভবতী নারী ও বয়স্ক যাত্রীদের জন্য বগিতে আসন সংরক্ষিত থাকবে।

বুধবার থেকে ছুটবে দেশের প্রথম এই বৈদ্যুতিক ট্রেন। প্রথম ধাপে চলবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার পথ। এই পথে একবার চলতে মেট্রোরেল সময় নেবে ২০ মিনিট। তবে পূর্ণমাত্রায় চালু হলে এই সময় কমে আসবে ১৬-১৭ মিনিটে।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোম্পানির প্রধান ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের সঙ্গে যাত্রীদের অভ্যস্ততা তৈরি করা এবং আন্তর্জাতিক মান বিবেচনা করে প্রথম দিকে ট্রেনের চলাচল সময়টা কম এবং ট্রেনের স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বেশি থাকবে।

“আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস যেটা, যখন যাত্রী পরিবহন শুরু হবে, সেই ক্ষেত্রে একদম প্রথম থেকেই পরিপূর্ণভাবে যাত্রী বহন করে চলাচলটা শুরু করে না। এটা ক্রমান্বয়ে অগ্রসর হয়। প্রথম দিকে হয়ত কম সময় চলবে। দুই থেকে তিন মাসের ভেতরে একদম শতভাগ অপারেশন যেভাবে চলে, সেভাবে চলবে।”

এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “প্রথম দিকে হয়ত সকালের দিকে কিছুক্ষণ চলবে, বিকালে কতক্ষণ চলবে। সপ্তাহ পরে আরও কিছু সময়ে বাড়াব। এভাবে বাড়তে বাড়তে পরিপূর্ণ মাত্রায় যাবে।

“প্রথম দিকে চার মিনিট পরপর ট্রেন চালালে জনসাধারণ এটার সাথে অভ্যস্ত হতে বা সেভাবে পরিচিত হতে পারবেন না। আবার আমরা দাঁড়ানোর সময়টাকে হয়ত এক সময় ৩০ সেকেন্ডে নিয়ে আসব। কিন্তু প্রথম দিকে যদি আপনি এক-দুই মিনিট না দেন, তাহলে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে নামবেন-উঠবেন, এই কাজগুলো হবে না। এ জন্য প্রথম দিকে আমরা বেশি সময় দাঁড়াব।”

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের ৯টি স্টেশন থাকছে, যার মধ্যে আছে- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও। 

মেট্রোরেল নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি মেট্রোরেল সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে। ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ভাড়া গুনতে হবে ২০ টাকা। শুরুতে টিকেট কেবল স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে এবং সেটা রিচার্জ করা যাবে।

ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানান, প্রথমদিকে স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকেট বিক্রয় মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকেট (সিঙ্গেল জার্নি টিকেট) কেনা যাবে। এছাড়া স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে এবং সেটা রিচার্জ করা যাবে।

পরে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস দিয়েও এমআরটি পাসের টাকা রিচার্জ করা সম্ভব হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।