শাহবাগে বুধবার তৃতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি শেষে মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরমুখী হন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
Published : 12 Feb 2025, 08:54 PM
হাই কোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত প্রার্থীরা রাজধানীর মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
তবে বৃহস্পতিবার ফের শাহবাগে জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন তারা।
আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক মজিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অধিদপ্তরের বার্তায় সন্তুষ্ঠ না হওয়ায় এখনও সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
“উনারা আইন আদালতের বিষয় বলছে, তাও যতটুকু দেখবে-সে আশ্বাস দিয়েছে। কাল (বৃহস্পতিবার) শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি হবে। যোগদান না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে।”
বুধবার শাহবাগে তৃতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে বিকালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরমুখী হন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত প্রার্থীরা।
এখনও সেখানে অবস্থান করছেন তারা। অধিদপ্তরের মূল ফটকে রয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
আন্দোলনকারী প্রার্থীদের নেতা ও ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার প্রার্থী তালুকদার পিয়াস সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। জনদুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচি বা সড়ক অবরোধ করিনি।
“বুধবার দুপুর পর্যন্ত সরকারকে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলে আমরা শাহবাগ থেকে অধিদপ্তরের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছি।”
তিনি বলেন, “বুধবার রাতে আমরা অধিদপ্তরের সামনেই থাকব, বৃহস্পতিবার সকালে আমরা শাহবাগে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে পারি। আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি কোথায় চলবে তা এখনও নিধারিত হয়নি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে রাতে সিদ্ধান্ত নেব।”
এর আগে মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ‘সড়ক না আটকিয়ে’ শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনরতরা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট।
আবারও শাহবাগে প্রাথমিক-এনটিআরসিএ'র নিবন্ধিত নিয়োগ প্রত্যাশীরা
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা
একই সঙ্গে আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ইতোমধ্যে আপিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে ৩০ চাকরিপ্রার্থীর করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দেন। ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যায়। বৃহস্পতিবার সেই রুলের ওপর রায় দেওয়া হয়।
নিয়োগ বাতিল হওয়া নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচিত প্রার্থী আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত থেকে কোটা পুনর্নির্ধারণ করার আগে আমাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষা হয়েছে। সরকার আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন। হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা বৈষম্যমূলক।”
এর আগে সোমবার দুপুরে শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা শাহবাগ মোড় আটকে অবস্থান নিলে তাদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। পরে রাত থেকে তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। এর আগে তারা প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানে ছিলেন।
গত শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তার বাসভবন যমুনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের কাছে আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, “হাই কোর্টে একটা রায় হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি রায় পুনর্বিবেচনার জন্য।”