"আমরা সামাজিকভাবে লাঞ্চিত হচ্ছি, রাস্তায় মার খাচ্ছি, আমরা দেখিয়ে দিয়ে যাব, বৈষম্যহীন সরকারের কাছে আমরা কিভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।“
Published : 12 Feb 2025, 01:56 PM
হাই কোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত প্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের দিকে রওনা হয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে সামিয়া ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেছেন, দাবি আদায়ে সরকারের কাছে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের আলটিমেটাম দেওয়া ছিল, যা মানা হয়নি।
সমাধান না পাওয়ায় তারা অধিদপ্তরমুখী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ইয়াসমীন।
তিনি বলেন, "ব্যানার মিছিল নিয়ে যাব। শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের বিষয়টা জানাব। সেখানে সমাধান না হলে পরবর্তীতে আমাদের কর্মসূচি বদলাব।
"আমরা সামাজিকভাবে লাঞ্চিত হচ্ছি, রাস্তায় মার খাচ্ছি। আমরা দেখিয়ে দিয়ে যাব, বৈষম্যহীন সরকারের কাছে আমরা কিভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব। আমরা নিয়োগপত্র হাতে পেতে চাই, আশ্বাসে বিশ্বাসী না।"
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত প্রার্থীরা এদিন শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তৃতীয় দিনের মত।
আগের দুইদিনের মত সকালেও জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে নিয়োগ নিশ্চিত করার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।
নারায়নগঞ্জের সুপারিশপ্রাপ্ত শামিমা আক্তার বলেন, "আমরা এতজন আন্দোলন করছি; একটা বার তারা (প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) কেউ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে? আমাদের আশ্বস্ত করার জন্য একজনও আসেননি এখানে। আমরা অনেক শান্ত ছিলাম, আর থাকতে পারছি না।"
নিয়োগ বাতিল হওয়া কিশোরগঞ্জে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী তহুরা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "উপস্থিতি বাড়লে মোড় অবরোধ করা হবে৷ দুইদিন কী হইছে দেখছেনই তো। আমাদের তো বসতে দিচ্ছে না, দাঁড়াতে দিচ্ছে না।"
চাঁদপুরের সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী নাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, যতদিন না পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে যোগদান নিশ্চিত করা হবে না ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
"আমাদের আপুদের হেনস্তা করছে, এটার বিচার দাবি করছি। এটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? এরা কোন আইনে আমাদের গায়ে হাত তুলে?"
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার দুপুরে শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা শাহবাগ মোড় আটকে অবস্থান নিলে তাদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর রাত থেকে তারা শাহাবাগে অবস্থান নেন। এর আগে তারা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানে ছিলেন তারা।
গত শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তার বাসভবন যমুনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের কাছে আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে উপদেষ্টা বলেন, "হাই কোর্টে একটা রায় হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি রায় পুনর্বিবেচনার জন্য।"
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল: শাহবাগে অবস্থান তৃতীয় দিনে