“বলেছি সংস্কার শেষে অতিদ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য; তবে সংস্কার শেষ না হলে সবই একই হবে,” বলেন মন্টু ।
Published : 19 Oct 2024, 06:55 PM
রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সংবিধান, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচন কমিশন ও দ্রব্যমূল্যসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে তাদের পরামর্শ তুলে ধরেছে গণফোরাম।
শনিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংলাপ শেষে দলটির সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, “পতিত স্বৈরাচার ও তাদের বিদেশি এজেন্টরা বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তার থেকে উদ্ধারের জন্য আমাদের সবাইকে জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন করতে হবে, এটার জন্য সার্চ কমিটি বা কিছু করার প্রয়োজন আছে, ভালো লোক নিয়োগ দেওয়ার দরকার আছে। যাতে অতীতের মত কোনো সমস্যা না হয়।
“আমরা কোনো নির্ধারিত তারিখ (নির্বাচনের) উল্লেখ করেনি। বলেছি সংস্কার শেষে অতিদ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। তবে সংস্কার শেষ না হলে সবই একই হবে। নির্বাচনের আগে থাকি রাম, নির্বাচনের পরে হই রাবণ। ওই ধরনের নির্বাচন কমিশন চাই না। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন চাই।”
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ করেন।
সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটি হবে প্রধান উপদেষ্টার চতুর্থ দফা সংলাপ। সবশেষ সংলাপ হয়েছিল গত ৫ অক্টোবর। এদিন আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনার সূচি রয়েছে।
সংলাপ শেষে যমুনা থেকে বের হয়ে মন্টু বলেন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কামাল হোসেন কথা বলেছেন। তারা বাজার পরিস্থিতির ওপর জোর দিয়েছেন। সিন্ডিকেট ভাঙার কথা বলেছেন।
সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে মন্তব্য করে সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, “বৈঠকে নির্বাচন ব্যবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ বেশ কিছু ব্যাপারে পরমার্শ দিয়েছি। সরকার সেটা ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছে। সরকার গঠিত কমিশনের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব কয়েকদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো হবে।”
‘এ সরকার জনগণের সরকার’
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সরকার মন্তব্য করে সবাইকে একমত হয়ে দেশ এগিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন মন্টু ।
সংলাপ শেষে তিনি বলেন, “এ সরকারকে রক্ষার স্বার্থে অর্থাৎ আমাদের নিজেদের রক্ষার স্বার্থে, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) যেকোনো বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা চাইবেন। আমরা যেটা উপলব্ধি করব, সেটাই পরামর্শ দেব। জনগণের জন্য দরজা খোলা আছে বলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন।”
পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। সেটা উত্তরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সেটা কোনো দলীয় চিন্তা চেতনা নয়, জাতীয় ঐক্যমতের চিন্তায় এগুতে হবে।”
সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নে মন্টু বলেন, “দুয়েকদিনের মধ্যে আলোচনা করে লিখিত আকারে দেব।”
আটটি দিবস বাতিলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জাতীয় দিবস ছাড়া কোনো দিবসই রাখা উচিত না।”
সংলাপে গণফোরামের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন গণফোরামের সমন্বয় কমিটির কো-চেয়ারম্যান এস এম আলতাফ হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, সদস্য একেএম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মোশতাক আহমেদ ও সুরাইয়া বেগম।
আরও পড়ুন-