যাদের ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।
Published : 11 Jun 2024, 01:19 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে যাদের ঘরবাড়ি একেবারে ভেঙে গেছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “গত কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হয়ে গেল। সেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ইতোমধ্যে আমরা তালিকা করেছি কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কতগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
“যেগুলো সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদেরকে আমরা ঘর তৈরি করে দেব। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো নির্মাণে উপকরণ দিয়ে সহায়তা করব। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে আমরা আছি। প্রাথমিকভাবে যা যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি৷"
মঙ্গলবার লালমনিরহাট, ভোলা ও কক্সবাজারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
গত ২৬ মে রাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সরকারি হিসাবে, ঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে, ঘর ভেঙে ও দেয়াল ধসে পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘরবাড়ি যাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদেরকে চিন্তার কোনো কারণ নাই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেকে যেন ঘর নির্মাণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব। ইতোমধ্যে সেভাবে আমার প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রত্যেক এলাকা থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেই অনুযায়ী আমরা সহায়তা পাঠাব।”
এদিন ১৮ হাজার ৫৬৬টি পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্য দিয়ে দেশের ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতার দখলকারীরা এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে ব্যস্ত ছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের সেবক হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
“তখন থেকেই ভূমিহীন মানুষদের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার পরও ভূমিহীন মানুষদের মাঝে ঘর তৈরি করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প নিয়ে আমরা ঘর বানাতে শুরু করি।"
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ভূমি ও গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে কেবল আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসিত হয়েছেন ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়ে অসহায় মানুষে জীবন বদলে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের মানুষের সেবক হিসেবেই বাবার মতো সেবা করে যাব। এই দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত জীবন পাবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
“আশ্রয়ণের মাধ্যমে মানুষের যে পরিবর্তন হয়েছে, তাতে মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।"
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তিনি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে চেয়েছিলেন। সেটিই আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এজন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। বঙ্গবন্ধুর মতো আজীবন দেশের মানুষের কল্যাণে ও তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।”
শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেকটা গ্রামকে আমরা নাগরিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসব। সেই নাগরিক সুবিধা আমরা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। পাশাপাশি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি; যার সুফল মানুষ ভোগ করছে।"